দেশজুড়ে

নড়াইলে ইউএনওসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের

কাজ না করে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ও প্রকৌশলীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করেছে দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তাদের বিরুদ্ধে ২৭টি প্রকল্পের বিপরীতে ৫৪ লাখ ৪৬৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। দুনীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আলী আকবর বাদী হয়ে শুক্রবার লোহাগড়া থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ এ ঘটনায় উপজেলা প্রকৌশলীকে আটক করেছে। অন্য আসামিরা হলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু, প্রাক্তন উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মো. সেলিম রেজা, উপজেলা প্রকৌশলী ওসমান গনি, তিনজন ঠিকাদার যথাক্রমে পরিমল কুমার ঘোষ, মো. আরাফাত আজম এবং সাফিয়া মোরশেদ।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে অনগ্রসর উপজেলার জন্য বিশেষ থোক বরাদ্দ উপখাত হতে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়।

উক্ত বরাদ্দকৃত টাকা হতে ২৪টি প্রকল্পের মধ্যে নদী ভাঙন কবলিত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে টিন বিতরণ, বাল্য বিবাহ নিরোধে গ্রামীণ নারীদের মাঝে শাড়ি ও ইমাম-কাজীদের মধ্যে পোশাক বিতরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া সামগ্রী, আসবাবপত্র, জার্সি ও বাদ্যযন্ত্র বিতরণ, কমিউনিটি ক্লিনিকে সিলিং ফ্যান বিতরণ, কলেজ, মাদরাসা ও ক্লাবে জার্সি বিতরণ, লাহুড়িয়া ও নলদী বাজারে ল্যাট্রিন নির্মাণ, ভূমি অফিসের ফাইল বাধা, যৌতুক, নারী নির্যাতন এবং মাদক নিরোধে জনসচেতনামূলক কর্মশালা, প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ, হাট বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিউবয়েল স্থাপন, শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয়,নিহার রঞ্জন গুপ্তের বাড়ির রাস্তা প্রশস্তকরণ, সরকারের উন্নয়ন প্রচারে র্যালি, দেবী বাজারে ইটের সোলিং,স্কীম জরিপ, আমাদা দাখিল মাদরাসার শ্রেণিকক্ষ নির্মাণসহ ২৪টি প্রকল্পে কোনো কাজ না করে পরস্পর যোগসাজসে মোট ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাত করেছে।

এছাড়া চাচই ওয়াপদা হতে কালনা সিএন্ডবি রাস্তা পর্যন্ত ইটের সোলিং নির্মাণে পৃথক ৩টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৮ টাকার কাজের মধ্যে আংশিক কাজ করে ১১ লাখ ৪৬৮ টাকা পরস্পর যোগসাজসে আত্মসাত করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

থানায় মামলা দায়েরের পরপরই বাদীর উপস্থিতিতে লোহাগড়া থানা পুলিশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ওসমান গনীকে আটক করেছে। গ্রেফতার এড়াতে অপর আসামিরা পলাতক রয়েছে।

লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

হাফিজুল নিলু/ এমএএস/পিআর