ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের গাইবান্ধার ৩২ কিলোমিটারের মধ্যে বেশিরভাগেরই অবস্থা করুণ। ফলে প্রতিদিন চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে এ পথের যাত্রীদের। ছোট-বড় গর্ত ও কার্পেটিংয়ের সময় পিচ জমে গিয়ে উঁচু হয়ে থাকা স্থানগুলো দিয়ে যানবাহন চলছে হেলেদুলে। সামান্য বৃষ্টি হলেই মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে পানি জমে থাকে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।
গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চাপড়িগঞ্জ বাজার থেকে সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট বাজার পর্যন্ত মহাসড়কের ৩২ কিলোমিটার অংশ গাইবান্ধা জেলার সীমানায় পড়েছে। এর মধ্যে ২০ কিলোমিটারের অবস্থা শোচনীয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এই মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চাপড়িগঞ্জ বাজার, ফাঁসিতলা, পাস্তা, বকচর, পান্থাপাড়া, গোবিন্দগঞ্জ চার রাস্তার মোড়, কালিতলা, কোমরপুর, অভিরামপুর ব্রিজ, পলাশবাড়ী উপজেলার দুবলাগাড়ী রাইগ্রাম, হরিনমারি, ড্রিমল্যান্ড, পলাশবাড়ী চার রাস্তার মোড়, গৃধারীপুর, সাদুল্লাপুর উপজেলার ইদিলপুর, চন্ডিপুর, চকষোলাগাড়ী ও ধাপেরহাট বাজারসহ অসংখ্য স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কার্পেটিংয়ের পর পিচ শক্ত হওয়ার আগেই যানবাহন চলাচলের কারণে পিচ জমে গিয়ে উঁচু হয়ে রয়েছে অসংখ্য স্থান। এ ছাড়া কিছু কিছু স্থানে ইট বিছিয়ে দেয়া হয়েছে; যা ফিনিশিংয়ের অভাবে উঁচু হয়ে রয়েছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ধাপেরহাট বাজার, পলাশবাড়ী চৌরাস্তা ও গোবিন্দগঞ্জের চৌরাস্তার মোড়ে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচলের কারণে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত এই মহাসড়কে ৩২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩৬ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
গত ঈদ-উল-ফিতরের আগে মহাসড়কটির অনেক স্থান জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা হয়। তবে সেই কাজ অতি নিম্নমানের হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে কয়েকদিনের মধ্যেই আবারও নষ্ট হয়ে গেছে।
রংপুর-ঢাকা রুটে চলাচলকারী এক বাসচালক বলেন, মহাসড়কে রোড ডিভাইডার এবং চারলেন তৈরির কাজ চলায় এখন ঢাকায় যেতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বেশি লাগছে। অপরদিকে মহাসড়কের বেহাল দশার কারণে যাত্রী কম হচ্ছে। ফলে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।
গাইবান্ধা জেলা শহরের ফকিরপাড়া এলাকার নাহিদ হাসান চৌধুরী রিয়াদ বলেন, জরুরি প্রয়োজনে কয়েকদিন আগে ঢাকায় যেতে হয়েছিল। সড়কের অসংখ্য স্থানে ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় বাস চলে দুলে দুলে।
ঠাকুরগাঁও জেলার গোয়ালপাড়া এলাকার ট্রাকচালক হিরা মিয়া (৩৫) বলেন, মহাসড়কের বেহাল দশার কারণে বাস, ট্রাকসহ মালবাহী গাড়ির এক্সেল, টিউব ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক উঁচুনিচু হওয়ার কারণে টায়ারে বেশি চাপ পড়ে বিষ্ফোরিত হচ্ছে। সময় বেশি লাগায় জ্বালানি খরচ বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, ফের জরুরি কাজ করতে গেলে লেয়ার টু লেয়ার মেলে না। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে বিটুমিন নষ্ট হয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কটি চারলেন হলে সমস্যার সমাধান হবে।
রওশন আলম পাপুল/এমএমজেড/এনএফ/পিআর