একটা সময় ‘ব্যাঙের ছাতা’ নামে পরিচিত থাকলেও পুষ্টি ও ওষুধি গুণসমৃদ্ধ খাবার মাশরুমের কদর ঢাকার মতো ধীরে ধীরে মাগুরায়ও বাড়ছে। এক দিকে এ জেলার অনেক প্রতিবন্ধী বেকার যুবক-যুবতী মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন তেমনি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে মাশরুম যাচ্ছে সৌদিআরবের বাজারে।শুধু খাদ্য গুণাগুণই নয়, বাজারে চাহিদা বাড়ায় ও চাষে লাভ বেশি হওয়ায় মাগুরার অনেক যুবক-যুবতী এখন মাশরুম চাষে আগ্রহী। মাশরুম চাষ করতে কোনো আবাদী জমি কিংবা বেশি মূলধনের দরকার হয় না। অল্প পুঁজিতেই ঘরের মধ্যে বাঁশের তাক করে মাশরুম চাষ করা যায়।প্রতিবন্ধী মাশরুম চাষি বাবুল আক্তার জাগো নিউজকে জানায়, ধান ও কাঠের গুড়া দিয়ে তৈরি মাশরুমের মাদার কালচার (বীজ প্যাকেট) এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলা যশোর, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর, নড়াইলসহ ঢাকায় যাচ্ছে।স্থানীয় চাষিরা আরো জানায়, ধান-পাট চাষের মতো মাশরুম চাষে কোন সার, মাটি বা কীটনাশকের প্রয়োজন না হওয়ায় ও চাষ প্রণালী সহজ হওয়ায় অনেক প্রতিবন্ধী যুবকরা ও অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবীরা এখন ঝুঁকছেন এ চাষে। এছাড়া বাজার ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এবং লাভ ভালো পাওয়ায় কেউ কেউ আবার তাদের খামার বড় করার পরিকল্পনা করছেন।তবে সরকারিভাবে চাষিদের মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করা হলে মাগুরায় দিন দিন এর চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে জানায় স্থানীয় চাষিরা।সবজি জাতীয় হালাল খাবার হওয়ায় মাশরুম খাদ্য হিসেবে অতুলনীয়। মাশরুমকে ‘সবজি মাংস’ বলা হয়ে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রামে (শুকনো মাশরুম) ২০-৩০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এছাড়াও মাশরুমে ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস ও কম মাত্রায় ক্যালসিয়াম ও লৌহ রয়েছে। লৌহ কম থাকাতেও সহজলভ্য অবস্থায় থাকে বলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায় রাখতে মাশরুম সহায়তা করে।এছাড়া এতে কোলেষ্টরল নেই, চর্বির পরিমাণও কম (২-৮%) এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড ও লিনোলোয়িক এসিড পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। এমনকি মাশরুমে পরিমিত কার্বোহাইড্রেট ও যথেষ্ট আঁশ (৮-১০%) থাকে। এতে কোন স্টার্চ নেই। শর্করার পরিমাণ কম বিধায় বহুমূত্র রোগীদের জন্য মাশরুম আদর্শ খাবার। মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ মো. আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, কম চর্বি, কোলেষ্টেরল মুক্ত এবং লিনোলেয়িক এসিড সমৃদ্ধ হওয়ায় মাশরুম হৃদরোগী ও ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।এসএস/এমএস