কয়েক মাসের ব্যবধানে ২৭০ টাকা মূল্যের গরুর মাংস বেড়ে গিয়ে ৪০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। দেশের কোন কোন অঞ্চলে সাড়ে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমিষের ঘাটতি পূরণের উপকরণের এমন ঊর্ধ্বগতিতে উদ্বিগ্ন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। ধারণা করা হচ্ছে এই ধারা অব্যাহত থাকলে রোজায় গরুর মাংসের দাম ৫০০ টাকা ছাড়াতে পারে।সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, সীমান্ত পথে ভারত থেকে আসা গরুর চালান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের গরুর মাংসের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। প্রভাবিত করছে অর্থনীতিকেও। ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে দেশিয় গরু উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মত প্রকাশ করেছেন তারা।বাংলাদেশে বছরে ৫৫ লাখ গরু জবাই করা হয়। যার অর্ধেকের যোগান আসে সীমান্ত পথে ভারত থেকে। মোদি’র সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয় বিবেচনা করে ভারত সরকার গরু রফতানির অনুমতি বন্ধ বহাল রেখেছে। বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে আপাতত সুরাহার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।বাংলাদেশ ভোক্ত অধিকার ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যান মতে, দেশে গত এক দশকে গরুর মাংসের চাহিদা দ্বিগুন হলেও উৎপাদন বাড়ার বদলে কমেছে ২০ শতাংশ।ভোক্তা অধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন নুরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, গরুর মাংসের বাজারের অস্থির উর্ধ্বগতি এবং অব্যাহত আমিশের চাহিদা মেটাতে দেশে গরুর উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে সরকার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। ভারত থেকে আসা গরুর উপর নির্ভরশীলতা কমানো উচিৎ ছিল আরো আগে থেকেই। সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকরা এ বিষয়টি কখনো গুরুত্বের সাথে দেখেনি। অথচ মাসে ৫ লাখের বেশী গরুর চাহিদা দেশের মাংস বাজারে।এ খাতে বাৎসারিক লেনদেন আড়াই হাজার কোটি টাকার উপরে। চাহিদা থাকার পরও কি কারণে দেশে গরুর উৎপাদন বাড়ছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে গাজীপুর সদরের সামন্তপুর গ্রামের গরু উৎপাদনকারী আলী হোসেন বলেন, খরচ না উঠা এবং তুলনামূলক কম লাভ হওয়ায় গরু লালন পালনে অনীহা চলে এসেছে।তিনি জানান, ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করা গরুর পেছনে ১ বছরে আরো ২০ হাজার টাকা খরচ করে ৬৫ টাকা বিক্রি করেছেন। এই বিনিয়োগ ও পরিশ্রমের পর গরু প্রতি লাভ হয়েছে মাত্র ৫ হাজার টাকা করে। এ জাতীয় অস্ট্রেলিয়ান গরুর পেছনে ভালো খরচ করতে হয়। যা আমাদের মতো সাধারন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে স্বল্প সুদে ঋণ এবং কম মুল্যে গো-খাদ্য পেলে এই ব্যবসায় সুফল ভোগ করা অনেকটা সহজ হতো।এআরএস/আরআইপি