দেশজুড়ে

রাজশাহীর ঈদের বাজার দখলে নিতে সক্রিয় চোরাকারবারিরা

ঈদের বাজার দখল করতে রাজশাহীর মার্কেটগুলোতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় কাপড়। ইতোমধ্যে ভারতীয় শাড়ি আর পোশাক বিভিন্ন রকমারি দামে ও নামে বিক্রি হচ্ছে। আকর্ষণীয় নাম নিয়ে থাকলেও গুণের তালিকায় এখন পর্যন্ত বাংলার ঐতিহ্যবাহী জামদানি, সিল্ক ও বালু চুরির মতো হরেক রকমের শাড়ি ও পোশাকগুলোই ক্রেতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে। মহানগরীর নিউমার্কেট, আরডিএ মার্কেট ও উপশহর নিউমার্কেট ও বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা যায় বেশ কিছু দোকানে ভারতীয় পোশাকের উপস্থিতি। এসব ভারতীয় পোশাক চোরাইভাবে বাজারে প্রবেশ করছে। নামের দিক থেকে বিখ্যাত হলেও গুণের দিক দিয়ে এরা দেশীয় পণ্যের ধারের কাছে নয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীসহ ক্রেতারা। ভারতীয় এসব পোশাক চলে নামের গুণে। নামের কারণে খুব সহজেই ক্রেতারা আকৃষ্ট হন ভারতীয় পোশাকের দিকে। সম্প্রতি রাজশাহী মহানগরীতে বিভিন্ন দিক থেকে ভারতীয় কাপড় প্রবেশ করছে। এসবের প্রধান রুট হিসেবে চোরাকারবারীরা ব্যবহার করছে রাজশাহীর আশপাশের সীমান্ত ও জয়পুরহাটের হিলি সীমান্ত এলাকা। হিলি সীমান্ত দিয়ে পাওয়া ভারতীয় বিভিন্ন কাপড় ট্রেনযোগে খুব সহজেই রাজশাহী মহানগরীতে এসে পৌঁছে যাচ্ছে। সম্প্রতি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার হনুমপুর এলাকা থেকে ১৪৭ পিস শাড়ি এবং ২৬ পিস লেহাঙ্গা পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। নগরীর সোনাদীঘির মোড় এলাকার কাপড় ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতীয় কাপড়ের তুলনায় গুণে ও মানে দেশি কাপড় ভালো। তবে বাজারে ভারতীয় কাপড়ের উপস্থিতি দেশি বাজারের জন্য ক্ষতির কারণ বলে ব্যবসায়ীরা মনে করন। মহানগরীর আরডিএ মার্কেটের উজ্জ্বল বস্ত্রালয়ের মালিক উজ্জ্বল হোসেন জাগো নিউজকে জানান, ঈদকে সামনে রেখে দেশি বিভিন্ন ডিজাইন আর দামের শাড়ি বাজারে এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বালু চুরি, হ্যান্ডি ব্লক, টাঙ্গাইল, জুট কাতান, সুতি, হাফ সিল্ক ও জামদানি সিল্ক, মুসলিন অ্যামব্রয়ডারি, মুসলিন শিপন, এনডি, বলাকা, জামদানি, ধুপিয়ান, র-কাতান, জয়শ্রী, স্বর্ণ কাতান, মুসলিন ব্রাশো, ঝলক কাতান। আর ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে জামদানি, সুতি, টাংগাইল, র-সিল্কের ওপর কাটোয়ার, অ্যাম্ব্রয়ডারি ও অ্যান্ডির মিশ্রণে হাতে বোনা সিল্ক শাড়ি। ক্রেতারা গরমের কারণে এবার সুতি শাড়িকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। এসব কাপড়ের তুলনায় ভারত থেকে আসা কাপড়ের মূল্য অনেক বেশি। তবে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন নামে ক্রেতাদের মন ভোলানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা।

নগরীর সাহেববাজার এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী আসলাম জাগো নিউজকে জানান, দেশি কাপড়ের চাহিদা ক্রেতাদের মধ্যে অনেক বেশি। তবে কিছু ব্যবসায়ী ভারতীয় বিভিন্ন নায়ক, নায়িকার নাম দিয়ে ভারতীয় কাপড়গুলোতে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করছেন। এতে অনেক ক্রেতা আর্কষিত হচ্ছেন।এ বিষয়ে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ৩৭ ব্যটালিয়ানের কমান্ডার লে. কর্নেল শাহজাহান সিরাজ জাগো নিউজকে জানান, চোরাকারবারীদের তৎপরতা এড়াতে রাজশাহীর সকল বিওপির ক্যাম্প কমান্ডারদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিছুদিন আগেও রাজশাহী রেল স্টেশনের একটি ট্রেনে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জিরা ও ভারতীয় পণ্য উদ্ধার করা হয়েছে। আর ঈদকে সামনে রেখে চোরাকারবারীদের সক্রিয়তা এড়াতে সর্বদা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ৩৭ ব্যটালিয়ানের (বিজিবি) সকল ইউনিট। আর রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাগো নিউজকে বলেন, দেশি কাপড় অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় অনেক ভালো। সে কারণে দেশি পণ্যের সুনাম ছড়াতে বেশি বেশি দেশি কাপড় বিক্রির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এমজেড/আরআইপি