নীলফামারীর ডিমলায় ৪টিসহ বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিটমহলে একযোগে যৌথ জনগণনা শুরু হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে যৌথ জনগণনার কাজ শুরু করা হয়। চলবে আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা নীলফামারীর ৪টি, লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি, কুড়িগ্রামে ১২টিসহ ১১১টি ছিটমহলে জনগণনার কাজে অংশ নিয়েছে ভারত থেকে আশা ৭৫ জন জরিপকারী প্রতিনিধি দল।অপর দিকে ভারতের কুচবিহারের ৪৭টি ও জলপাইগুড়ির ৪টিসহ ৫১টি ছিটমহলে জরিপের কাজে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ২৫ জন জরিপকারী প্রতিনিধি দল।নীলফামারীর ৪টি ছিটমহলে সোমবার সকাল থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণনা শুরু হয়েছে। সকালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ২৮ নং ছিটমহল বড় খানকি ও ৩১নং ছিটমহল নগর জিকাবাড়ীতে জনগণনা শুরু হয়েছে। ২৮ নম্বর ছিটমহলবাসীরা শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্যাম্পে ও ৩১ নম্বর নগরজিকাবাড়ী জয়নালের বাড়ির আঙিনা সংলগ্ন ক্যাম্পে জনগণনা শুরু করে।২৮ নম্বর ছিটমহলে জনগণনাকারী হিসেবে বাংলাদেশের আজিজুল ইসলাম ও ভারতের জয়দেব কুমার এবং ৩১নং নগর জিকাবাড়ী ছিটমহলে বাংলাদেশের আসাদুজ্জামান জুয়েল ও ভারতের সনজিব বসাক জনগণনা করছেন। বাংলাদেশের সুপারভাইজার হিসেবে ডিমলা উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এমদাদুল হক ও ভারতের পক্ষে মেকলিগঞ্জ পৌরসভার ভূমি সংস্কার দফতরের কর্মকর্তা অমরেশ পাল দায়িত্ব পালন করছেন।সোমবার দুপুর পর্যন্ত ২৮ নং ছিটমহলে ১৪টি পরিবার ও ৩১ নং ছিটমহলে ২১টি পরিবার জনগণনায় অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে কোনো পরিবার ভারতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেনি।নীলফামারীর জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন, পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, ডিমলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন খান, খগাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন, টেপাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন ছিটমহলের জনগণনা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।মঙ্গলবার রংপুর বিভাগীয় কমিশনার দিলোয়ার বখত ছিটমহলের জনগণনা কার্যক্রম পরিদর্শনে আসবেন মর্মে উপজেলা প্রশাসন নিশ্চিত করেছে।পরিদর্শন শেষে নীলফামারী জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ছিটমহলবাসীরা জনগণনায় অংশগ্রহণ করছেন। সোমবার সকাল ৯টা থেকে প্রতিটি ছিটমহলে স্থাপিত ক্যাম্পে জরিপ কাজ শুরু হয়। স্ব-স্ব ছিটমহলবাসী নির্দিষ্ট ক্যাম্পে এসে তালিকাভুক্তিতে অংশ নিতে শুরু করেছেন। জরিপ কাজ চলবে আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত।প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জরিপ ক্যাম্প খোলা থাকবে। অপর দুইটি ছিটমহল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে ৪টি ছিটমহলের জনগণনা করা হবে।সূত্র মতে ২০১১ সালে ১৬২টি ছিটমহলের জনগণনা হয়েছিল। সেই নিরিখে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকা ভারতীয় ১১১টি ছিটমহলের জনসংখ্যা ৩৭৩৬৯ জন। ভারতীয় ভূখণ্ড দিয়ে ঘেরা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের জনসংখ্যা ১৪২১৫ জন।গত চার বছরে ওই সংখ্যার অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করছে প্রশাসন। এসময়ের মধ্যে নতুন করে অনেকের জন্ম হয়েছে অনেকে আবার মারাও গিয়েছেন। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি কী রয়েছে তা এ জনসংখ্যায় স্পষ্ট হবে। পাশাপাশি ছিটমহলের বাসিন্দারা কোন দেশে থাকতে চান তা নিয়েও তথ্য সংগ্রহের কাজ করবে জনগণনায় নিযুক্ত দল।জাহেদুল ইসলাম/এমজেড/আরআই