দামে সস্তা, পরতে আরাম, দেখতে সুন্দর, তাছাড়া নিজস্ব স্বকীয়তা আছে, আর তাই শাড়ি কেনার জন্য আমার প্রথম পছন্দ মণিপুরী তাঁতের শাড়ি। কথাগুলো বলছিলেন মণিপুরী শাড়ি ক্রয় করতে আসা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী উম্মে মাহবুবা তাজিন। তিনি নিজে মণিপুরী সম্প্রদায়ের কাপড় পরার পাশাপাশি অন্যকে উপহার দেয়ার জন্যও বেছে নেন এ সম্প্রদায়ের তৈরি কাপড়।দেশ ও দেশের বাইরে এ হস্তশিল্পের বেশ কদর রয়েছে। সিলেটের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও প্রসারে এ শিল্পের অবদান রয়েছে। সিলেটে আসা পর্যটকটদের ভ্রমণের পাশাপাশি প্রথম পছন্দ থাকে মনিপুরী সম্প্রদায়ের তৈরি কাপড়ের। আবার প্রায়ই সিলেটিদের অন্যান্য অঞ্চলের অতিথিদের আবদার পালন করতে হয় মণিপুরী পোশাক দিয়ে।সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জমে উঠেছে সিলেটের ঈদ বাজার। বিপণী বিতান থেকে শুরু করে শপিংমল ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। কেনাকাটা জমে ওঠেছে নগরের লামাবাজার মণিপুরী সম্প্রদায়ের তৈরি পোশাক শিল্পের দোকানগুলোতেও। মঙ্গলবার রাতে এ সম্প্রদায়ের তৈরি পোশাকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এসব দোকানগুলো থেকে মনিপুরী শাড়ি, ফতুয়া, গামছা, কাথাঁ, চাদর কেনা যাবে। প্রতিটি শাড়ির মূল্য সর্বনিম্ন ১০০০ থেকে শুরু করে ৩০০০ টাকার মধ্যে ক্রয় করা যাবে। ফতুয়া কেনা যাবে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। শার্ট কেনা যাবে ৩৫০-৮০০ টাকার মধ্যে। চাদর কেনা যাবে ৫০০-২০০০ টাকার মধ্যে। মদন মোহন কলেজ রোড লামাকাজারে অবস্থিত নিউ শ্যামল মণিপুরী শাড়িঘরের কর্মতর্কতা বাবলী সিনহা জাগো নিউজকে জানান, এবারের ঈদে তাদের বিক্রি ভাল। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তাদের দোকানগুলোতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। তিনি জানান, তাদের এখানে মণিপুরী শাড়ি, থ্রিপিছ, চাদর, নকশি কাঁথা, কটিসহ তাঁতের কাপড় রয়েছে।দেশের খ্যাতিমান ফ্যাশন ডিজাইনার ও মণিপুরী হ্যান্ডলুম প্রজেক্ট অব একডো এর কনসালট্যান্ট চন্দ্র শেখর সাহা জানালেন, অন্যান্য সংস্কৃতির কাপড়ের প্রতি যেমন মানুষের আগ্রহ রয়েছে তেমনি মণিপুরী সম্প্রদায়ের কাপড়ের প্রতিও মানুষজনের আগ্রহ রয়েছে। উৎসব পার্বণেও এ সম্প্রদায়ের কাপড় ক্রেতারা ক্রয় করছেন সেটা আমাদের জন্য সুসংবাদ। এক প্রশ্নের জবাবে এ ফ্যাশন ডিজাইনার বলেন, এ শিল্পের অভাবনীয় সাফল্য রয়েছে। এগিয়ে যাবার জন্য এ শিল্পের সবকিছুই রয়েছে। এখন সময় শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার।সিলেট-হবিগঞ্জ নারী সাংসদ আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী সব সময় মণিপুরী শাড়ি পরিধান করেন। এবারের ঈদেও তিনি বেশ কিছু মণিপুরী শাড়ি ক্রয় করেছেন। এ নারী সাংসদ জাগো নিউজকে বলেন, এ সম্প্রদায়ের কাপড়ের মাঝে আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মিশেল রয়েছে। আমি নিজে সব সময় এ সম্প্রদায়ের তৈরি কাপড় পরিধান করি এবং অন্যকেও উৎসাহিত করি। যে কাউকে উপহার দেয়ার সময়ও এ কাপড় আমার প্রথম পছন্দ। এসএস/পিআর