দেশজুড়ে

বীরগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় সুলতানা খাতুন (২৫) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে পৌর শহরের `বীরগঞ্জ ক্লিনিক`কে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুলতানা খাতুন উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব দাড়িয়াপুর গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী।নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. দিনার উদ্দিন জানান, পূর্ব দাড়িয়াপুর গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের গর্ভবতী স্ত্রী সুলতানা খাতুনকে চিকিৎসকের পরামর্শে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় পৌর শহরের `বীরগঞ্জ ক্লিনিক`কে ভর্তি করা হয়। রাত ৭টায় অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করার পর রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স যোগে রোগীকে দিনাজপুর নিয়ে যায়। পরে ৮টায় তার মৃত্যু হয়।নিহতের স্বামী মো. আনোয়ার হোসেন জানান, আমার স্ত্রী হেঁটে হেঁটে বাড়ি থেকে পাকা সড়কে এসে গাড়ি করে বীরগঞ্জে আসে। সে একেবারে স্বাভাবিক ছিল। সন্ধ্যা ৭টায় রোগীকে অপারেশ থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত চিকিৎসক বলেছেন আপনার রোগী অবস্থা ভালো। কিন্তু সিজারের পর অপারেশন থিয়েটার থেকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সরাসরি অ্যাম্বুলেন্সে আমার স্ত্রীকে দিনাজপুর নিয়ে যায়। অ্যাম্বুলেন্সে পরিবারের কাউকে নেয়নি তারা। রোগীর শারীরিক অবস্থা আমাদের অবহিত না করেই দ্রুত দিনাজপুর নিয়ে গিয়ে পরে আমাদের জানানো হয় রোগীর মৃত্যু সংবাদ। পরে আমি নার্সদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারি আমার স্ত্রী অপারেশন থিয়েটারেই মারা গেছে এবং অস্ত্রপাচারের ভুলের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।ক্লিনিক মালিক মো. বেলাল হোসেন জানান, ডা. মাসতুরা বেগম প্রসূতি সুলতানা খাতুনের সিজার করেন। রোগী দুর্বল থাকার কারণে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। আমরা রোগীকে দ্রুত জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যায়। পরে সেখানে রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টায় তার মৃত্যু হয়। তবে শিশুটি সুস্থ আছে।ক্লিনিকের অনুমোদন আছে কি না জানতে চাইলে ক্লিনিক মালিক মো. বেলাল হোসেন জানান, ৪০ হাজার টাকা খরচ করলেই ক্লিনিকের অনুমোদন পাওয়া যায়। আর মাসে ১০ হাজার টাকা সিভিল সার্জন অফিসে উৎকোচ হিসাবে দেয়ার শর্ত মেনে নিলে সিভিল সার্জন অফিস আর কোন ঝামেলা করেনা।         উল্লেখ্য, নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে বীরগঞ্জ উপজেলার সদরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে চারটি ক্লিনিক। ক্লিনিকগুলির অবকাঠামো, চিকিৎসা সেবা নিয়ে অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে চোখে পড়েনি। ববং প্রতিনিয়ত ক্লিনিকগুলিতে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে দেখার কেউ নেই।এমদাদুল হক মিলন/এআরএ/এমএস