রাঙ্গামাটিতে ছোট-বড় অনেক পাহাড় রয়েছে। এ পাহাড়ের পাদদেশে সমতল ভূমিতে উৎপাদিত হচ্ছে ‘বিলাতি ধনিয়া’নামে ধনেপাতা। পাহাড়ি জমিতে প্রতি বছর এ ধনেপাতার চাষ করে আসছে পাহাড়ি কৃষকেরা। পাহাড়ের উৎপাদিত বিলাতি ধনিয়ার চাহিদা সর্বত্র রয়েছে। তাই পাহাড়ের চাহিদা মিটিয়ে এ ধনেপাতা দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে।
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই, ঘাগড়া, সাপছড়ি, ওয়াগ্গা ও শীলছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি জমিতে বিলাতি ধনেপাতার চাষ করে আসছে পাহাড়ি কৃষকরা। অল্প সময়ে ফলন আসে বলেই বিলাতি ধনেপাতার চাষ করে এদের অনেকেই স্বাবলম্বী। এ বছর ধনেপাতার উৎপাদন বেড়েছে। সেই সঙ্গে উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে।
চাষি প্রত্যুত্তর চাকমা বলেন, আমি আমার দুই কানি জমিতে বিলাতি ধণিয়া চাষ করেছি। এই চাষে সার ঔষধ দিতে হয়। তাই সব মিলিয়ে খরচ একটু বেশি পড়ে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার দ্বিগুণ ফলন হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতি কানি জমিতে দেড়-দুইশ কেজি ফলন হয়। এতে ৭০-৮০ হাজার টাকা খচর হয়। তবে তা বর্তমান বাজার দরে প্রতি কেজি ৭০-৭৫ টাকা করে বিক্রি করলে প্রায় দেড়-দুই লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তাই পাহাড়ের চাষিরা এ ধনেপাতা চাষের প্রতি বেশি আগ্রহী। এছাড়া আমাদের এই ধনেপাতা শুধু রাঙ্গামাটি নয়, চট্টগ্রাম-ঢাকা থেকেও অনেক ব্যবসায়িরা এসে নিয়ে যায়।
চাষি কিরণবালা চাকমা বলেন, ফসলে বেশি করে সার, ঔষধ দিতে হয়। এগুলো না দিলে ফলন ভালো হয় না। এছাড়া অন্যান্য খরচও রয়েছে। তাই সব মিলিয়ে খরচ বেশি হয়। কিন্তু ফলন ভালো হওয়াতে দাম মোটামুটি পাচ্ছি।
পার্বত্য এলাকায় ধনেপাতা চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে সহজ শর্তে কৃষকদের কৃষি ঋণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার দাবি পাহাড়ের এই চাষিদের।
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের কৃষকদের কাছে বিলাতি ধনিয়া চাষ বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা যদি গত পাঁচ বছরের রাঙ্গামাটি কৃষি পরিসংখ্যান দেখি তাহলে বলতে পারবো আগে এ ধনেপাতা ১৯০-২০০ হেক্টর জমিতে চাষ হতো। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ২৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে।
আরএ/আরআইপি