নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত জাকারিয়া ভূঁইয়ার মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জয়পুরায় দাফন করা হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাদা-দাদির কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হয়। নিহত জাকারিয়াকে শেষবারের মতো দেখতে তার বাড়ি শত শত লোক ভিড় করে।
এ সময় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা ইয়াসমিন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান ভূঁইয়া বদিসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংসারে সচ্ছলতা আনতে প্রায় আড়াই বছর আগে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের জয়পুরা গ্রামের আব্দুল বাতেন ভূঁইয়ার বড় ছেলে জাকারিয়া ভূঁইয়া নিউজিল্যান্ড যান। গত ১৫ মার্চ (শুক্রবার) ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামক একজন অস্ট্রেলিয়ান নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক নিয়ে হামলা চালালে ৫০ জন মুসল্লি নিহত হন। হামলায় আহত হন অন্তত ৪৮ জন। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন এবং আহতদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি রয়েছেন।
এদিকে বুধবার জাকারিয়ার মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি আনার পর এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাড়িজুড়ে শুরু হয় শোকের মাতম। স্বামীকে হারিয়ে সংজ্ঞাহীন নিহতের স্ত্রী। স্বজনদের আহাজারি আর কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ।
নিহত জাকারিয়ার স্ত্রী রীনা বেগম বলেন, ‘আমার তো সবই শেষ। স্বামীও শেষ। সংসারও শেষ। বেঁচে থাকার সম্বল শেষ। চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। স্বামীর যেন বেহেশত নসিব হয়, সবার কাছে সেই দোয়া চাই।’
নিহতের বাবা আব্দুল বাতেন ভূঁইয়া বলেন, মরদেহের সঙ্গে কিছু আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে বলে আমাদের নিউজিল্যান্ড থেকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কিছুই পাইনি।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা ইয়ামিন বলেন, উপজেলা প্রশাসন শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে মরদেহ গ্রহণ করে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এছাড়া বিধি-বিধান অনুযায়ী নিহতের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।
সঞ্জিত সাহা/আরএআর/এমএস