জাতীয়

ক্রেতার অপেক্ষায় হকাররা

ফুটপাত থেকে উচ্ছেদ করায় পথে বসার দশা ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের। সুনির্দিষ্ট স্থানে ব্যবসা করার অনুমতি চেয়ে তোড়জোড়ও চলছিল। এরই মধ্যে রাজধানীর ১১টি স্থানে হলি ডে মার্কেট স্থাপনের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে সিটি কর্পোরেশনকে অনুরোধ করা হয়। এরপর রাজধানীতে বেশ কয়েকটি জায়গায় বসেছে হলি ডে মার্কেট। তবে এখনও জমেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, বঙ্গবাজার, সেগুনবাগিচা, মতিঝিলে ফের বসেছে হকাররা। গুলিস্তান ও মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে সন্ধ্যার পর কতিপয় ক্রেতা মিললেও অধিকাংশ স্থানেই ক্রেতা সমাগম নেই বললেই চলে।

শুক্র ও শনিবার রাজধানীর কার্পেট গলি (মৎস্য ভবন থেকে শিল্পকলা একাডেমি) ও কাঁটাবন গলি সরেজমিনে ঘুরে ক্রেতার অপেক্ষায় বসে থাকতে দেখা যায় হকারদের। আবার ক্রেতা এলেও বেচাবিক্রি কম।

হকাররা বলছেন, উচ্ছেদের পর ক্রেতাদের সঙ্গে হকারদের যোগাযোগে ছেদ পড়েছে। ফুটপাতে কেনাকাটায় অভ্যস্ত ক্রেতাদের অনেকেই জানেন না হকাররা ফের বসছে ফুটপাতে।

কার্পেট গলির ফুটপাতে কথা হয় ক্ষুদে ব্যবসায়ী হারুন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যহন ফুটপাতে ব্যবসা জমজমাট ছিল তহনও এইহানে ব্যবসা করছি। উচ্ছেদের পর অনেকে বেকার ঘুরছি। এহন আবার গুটায়া ফুটপাতে বইসা পড়লেও ক্রেতার দেখা নাই। ক্রেতা আসলেও কিনতাছে না।’

একই এলাকায় কাপড় থ্রি-পিসের ব্যবসায়ী শেফালি আক্তার বলেন, ‘আমার অসংখ্য নারী ক্রেতা ছিল। বসতাম মতিঝিলে। ওখান থেকে উচ্ছেদের পর এখানে আসছি। এখানে আসার পর ক্রেতা কমেছে। আর সপ্তাহে দুদিন বসতে পারি এখানে। পেটের খাবার জোগাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

হকারদের ব্যবসা ও সব শ্রেণির মানুষের কথা বিবেচনায় উদ্যোগী হয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর ৬টি অঞ্চলে ১১টি হলিডে মার্কেট চালুর উদ্যোগ নেয় তারা।

রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে হকাররা যাতে ব্যবসা করতে পারেন সে জন্য সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন অর্থাৎ শুক্র ও শনিবার এ ১১টি এলাকায় হলিডে মার্কেট চালুর সিদ্ধান্ত হয় যা বাস্তবায়নে সিটি দুই সিটি কর্পোরশনকে চিঠি দেয় ডিএমপি।

ওই ১১টি হলিডে মার্কেটের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৫টি। তা হচ্ছে- কার্পেট গলি (মৎস্য ভবন থেকে শিল্পকলা একাডেমি), নালারপাড় (কাটাবন থেকে শাহবাগের দিকে প্রথম গলি), মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের রাস্তা, বক চত্বর থেকে পূবালী ব্যাংক রোড পর্যন্ত এবং যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার পূর্ব পাশ এলাকা।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন ৬ স্থানে বসার কথা হলি ডে মার্কেট। তা হচ্ছে- লালমাটিয়া মাঠ (আড়ংয়ের পেছনে), সলিমুল্লাহ সড়কের পানির ট্যাংক মাঠ, মিরপুর-১ নম্বর থেকে রাইনখোলা, হারুন মোল্লাহ ঈদগাহ মাঠ, উত্তরার জমজম টাওয়ারের পশ্চিম পাশের খালি প্লট এবং কাবাব ফ্যাক্টরির সামনের খালি চত্বর।

বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা হলি ডে মার্কেট চাইনি। তবুও আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন স্বাচ্ছন্দ্যে নেই হকাররা। কেনাবেচা কম। ক্রেতা সমাগমও কম। তবে ২-৪ দিন পর ব্যবসা জমতে পারে।’ ঈদের পরও হলি ডে মার্কেট চালু রাখার দাবি জানান তিনি।

জেইউ/এনডিএস/পিআর