যেখানে দেশি জাতের পেঁয়াজের ফলন বিঘাপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ মণ হয়, সেখানে ভারতীয় জাত সুখসাগর পেঁয়াজের ফলন হয় ১৫০ থেকে ২০০ মণ। তারপরও সুখসাগর পেঁয়াজ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন মেহেরপুরের কৃষকরা। সংরক্ষণাগার না থাকা আর ভরা মৌসুমে দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমাদানি হওয়ায় প্রতি বছরই লোকসানের মুখে পড়ছেন কৃষকরা।
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন। তিনি জমিতে পেঁয়াজ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে তার চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। কারণ গেল বছরে ১০ বিঘা জমিতে ভারতীয় সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ করে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন তিনি।
আলমগীর হোসেন জাগো নিউজকে জানান, এবারও ৮ বিঘা জমিতে সুখসাগর পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। তবে শঙ্কা ভর করেছে যদি ভরা মৌসুমে দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজের আমদানি হয়...। তার মতো একই অবস্থা মুজিবনগর উপজেলার শত শত কৃষকের।
পেঁয়াজচাষি জাহারুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, জেলায় তাহেরপুরি জাতের পেঁয়াজের ফলন হয় বিঘাপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ মণ। অন্যদিকে সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের ফলন বিঘাপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ মণ হয়। ফলে ভারত থেকে বীজ এনে অনেকেই এ জাতের পেঁয়াজ চাষ করেন। ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন অনেকেই। এখন অনেক চাষি নিজেরাই বীজ উৎপাদন করেন। তবে সংরক্ষাণাগার না থাকা আর ভরা মৌসুমে পেঁয়াজের আমদানি হওয়ায় পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। সারাদেশে এ জাতের পেঁয়াজের চাষ ছড়ানো যাচ্ছে না।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান জাগো নিউজকে জানান, দেশে এ জাতের পেঁয়াজের চাষ ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। সারাদেশে এই সুখসাগর পেঁয়াজ যাতে ছড়িয়ে দেয়া যায় সে চেষ্টাই চলছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদ জাগো নিউজকে বলেন, এ জাতের পেঁয়াজে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় লম্বা সময় ধরে সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়। তবে গবেষণা চলছে। আর ভরা মৌসুমে যাতে দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করা হয় সেই লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
আসিফ ইকবাল/আরএআর/জেআইএম