দেশজুড়ে

রাজাকারের তালিকায় রাজবাড়ীর ৪২ জন

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। প্রথম পর্যায়ে প্রকাশিত এই তালিকার মধ্যে রাজবাড়ীর ৪২ জন রয়েছেন।

তালিকার ৬২ নং সিরিয়াল থেকে ১০৬ পর্যন্ত ৪৪ জন রাজাকারের নাম রয়েছে। তবে ৯৮ ও ১০২ নং সিরিয়ালে কোনো নাম নেই। ফলে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী জেলায় রাজাকারের সংখ্যা ৪২ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬ জন, বালিয়াকান্দিতে ৩ জন, পাংশায় ১৬ জন ও গোয়ালন্দে ৭ জন।

তালিকায় থাকা রাজাকাররা হলেন- রাজবাড়ী সদরের নাউডুবি এলাকার হুসাইন খানের ছেলে আকবর আলী খান, আলাদীপুরের হযরত আলীর ছেলে রবিউল মিয়া, মধুরদিয়ার সাঈদের ছেলে এসএম জাকারিয়া, ডিল মোহাম্মদের ছেলে মো. হানিফ, খানখানাপুরের আব্দুল হাকিমের ছেলে আব্দুল রাজ্জাক, চর খানখানাপুরের বাজার আলীর ছেলে আব্দুর রহমান মোল্লা, গড়িপুর রিফোজি কোলনির ইদ্রিস আলীর ছেলে আব্দুল জলিল, ভাজনচালার মো. জামান মিয়ার ছেলে মো. শুকুর, বাট্টালার ওয়াসিমউদ্দিনের ছেলে আব্দুর রশিদ মিয়া, বাউনিপুরের আবেদ আলীর ছেলে মুজিবুর রহমান, মহারাজপুরের গোপাল মোল্লার ছেলে আব্দুল লতিফ মোল্লা, মজলিশ পুরের উমেদ শেখের ছেলে আব্দুস সাত্তার শেখ, চর খানখানাপুরের খোয়াজ মন্ডলের ছেলে মো. ইসমাইল, বাগমারার হাফিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুল হান্নান, মুঝুরদিয়ার শরিয়াতুল্লাহর ছেলে আকবর মন্ডল, আলাদীপুরের রফিকের ছেলে মো. সফি মিয়া ও মহিষবাথানের আব্দুর রহমানের ছেলে আজহার আলী মন্ডল।

বালিয়াকান্দি উপজেলার বচনপুরের আব্দুল হামিদ মোল্লার ছেলে আব্দুল হান্নান মোল্লা, রাজধরদির আব্দুর রহমানের ছেলে মো. আকবর আলী খান, আব্দুল মাজিদের ছেলে মোজায়েম হুসাইন।

পাংশার কাউখোলার ইসমাইলের ছেলে আব্দুল জব্বার মন্ডল, আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল মালেক খান, কালিকাপুরের কেসমত আলীর ছেলে হুসাইন আলী শেখ, ইসমাইল সাটাইয়ের ছেলে আবুল কালাম আজাদ, হাযরাপাড়ার লাট্টা শেখের ছেলে সাইফুদ্দিন শেখ, জহুর শেখের ছেলে খোরশেদ আলী শেখ, হাদারকোটার ইনতাজ মন্ডলের ছেলে আব্দুল জলিল মন্ডল, ভাথশালার নুরুজ্জামানের ছেলে সৈয়দ সফিকুল আলম, পাকশিয়ার ইসাহাকের ছেলে সহিদুল ইসলাম, মাজবাড়ীর আইনউদ্দিনের ছেলে কাজী সাইদুল ইসলাম, নুরুল হকের ছেলে কাজী সানাউল্লাহ, টাফুলিয়ার জাকির আলী খানের ছেলে আব্দুল আজিম খান, বারাইঝুড়িরর আসালউদ্দিনের ছেলে কাজী আমজাদ হুসাইন, খোসবাড়িরর মহসিন মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল মিয়া, রাহাটের ইউসুফ হুসাইন চৌধুরীর ছেলে নাজির হুসাইন চৌধুরী, মেঘচামীর সাদেক আলী খানের ছেলে আবুল বাশার খান।

গোয়ালন্দ উপজেলার গোয়ালন্দঘাটের জলিল ব্যাপরীর ছেলে মো. সিদ্দিক, জাফর আলীর ছেলে কাজী হুসাইন আলী, চর পাঁচুরিয়ার ফাজিউদ্দিনের ছেলে আফজাল সরদার, শ্যামসুন্দর পুরের মোকলেসুর রহমানের ছেলে আব্দুল ওহাব খান, খানদিয়ার আব্দুর রহমানের ছেলে মতিউর রহমান, তফদিয়ার শুকুর শেখের ছেলে আব্দুল জলিল ও কাসেম সিদ্দিকীর ছেলে আলী হুসাইন সিদ্দিক।

এই তালিকায় ৯৬ নং সিরিয়ালে পাংশার ইউসুফ হুসাইন চৌধুরীর ছেলে নাজির হুসাইন চৌধুরীর নাম রয়েছে। যিনি কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটোর বাবা।

এ ব্যাপারে কালুখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটো দাবি করে বলেন, তার বাবা রাজাকার ছিলেন না।

এদিকে বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করার আগে একটু চিন্তা করা উচিত ছিল। কারণ অনেকে রাজাকার হয়েও মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন। তাহলে তিনি রাজাকার না মুক্তিযোদ্ধা? তালিকায় কালুখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটোর বাবার নাম এসেছে। যুদ্ধের সময় তিনি কুষ্টিয়ায় যুদ্ধ করেছেন। আমি নিজে দেখেছি। তবে তিনি (নাজির হুসাইন চৌধুরী) কালুখালীর রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। কিন্তু কেন ছিলেন সেটাও জানতে হবে। কমান্ডার সেজে তখন ওই অঞ্চলের মানুষকে পাক বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করেছেন। এটা অনেকেরই জানা।

রাজবাড়ির রাজাকারদের তালিকা দেখতে ক্লিক করুন

রুবেলুর রহমান/এমবিআর/পিআর