দেশজুড়ে

পাঁচ দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি পঞ্চগড়ে

পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে চরম দুর্ভোগ পড়েছে জেলাবাসী। পাঁচ দিন ধরে জেলার কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। দিনরাত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে আকাশ। কনকনে শীতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে জনজীবনে।

রোববার সকালে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজকের তাপমাত্রা অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে।

উত্তরের হিমেল হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রিকশা-ভ্যান চালকসহ শ্রমজীবীরা। দৈনন্দিন আয় কমে গেছে দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষের। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা কষ্টে দিনযাপন করছে। বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে বাড়ির আশপাশে এবং পথঘাটে শীতার্তদের শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি বরাদ্দসহ এ পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিদিন গভীর রাতে প্রত্যন্ত এলাকার এতিমখানাসহ শীতার্তদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে কম্বল বিলি করছেন জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন।

জেলা সদরের তুলার ডাংগা মহল্লার রিকশাচালক মো. লিটন বলেন, প্রতি বছর শীতে আমাদের কষ্টের সীমা থাকে না। শীত এলে আমাদের আয় রোজগার কমে যায়। ঠান্ডার কারণে কেউ রিকশায় উঠতে চান না। আমাদের শীতবস্ত্রের পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতাও প্রয়োজন।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, রোববার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সলসিয়াস। এই অবস্থাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। শনিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘনকুয়াশার কারণে সূর্য দেখা যায় না। রাত এবং দিনের তাপমাত্রা কমে যাওয়া ফলে এখানে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।

এদিকে শীতের রাতে কষ্টে থাকা শীতার্তদের মাঝে নিজেই শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছেন জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন। শনিবার তিনি বোদা উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়শশী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। একই সঙ্গে তিনি ওই ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ চারটি পরিবারের মাঝে নগদ টাকা, কম্বলসহ শুকনো খাবার বিতরণ করেন। এরপর স্থানীয় বালাপাড়া, শেখপাড়া ও ডাঙ্গাপাড়ার তিনটি মাদরাসার এতিম শিশু ও মহিলা মাদরাসার শিশু শিক্ষার্থীদের গায়ে কম্বল জড়িয়ে দেন। এ সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম রব্বানী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শীলা মোদক, সুবল চাকমা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, সরকারিভাবে এ পর্যন্ত ২৮ হাজার ৪০০ কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রাপ্ত কম্বলসহ ৩০ হাজারের বেশি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। গভীর রাতে প্রত্যন্ত এলাকার শীতার্ত এবং এতিম শিশুদের ঘুম থেকে ডেকে তাদের মাঝেও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা আরও শীতবস্ত্র বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।

সফিকুল আলম/এমবিআর/জেআইএম