স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজের নাম সরিয়ে নিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। জানিয়েছেন নতুন কেউ যেনো তার জায়গায় সুযোগটা পায়, তাই এমন সিদ্ধান্ত। পরে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও বলেছিলেন, মাশরাফির নিজের ইচ্ছাতেই তাকে এবার রাখা হবে না বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে।
তবে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে না থাকলেও, বাংলাদেশ জাতীয় ওয়ানডে দলের অধিনায়কের পদটি এখনও মাশরাফির জন্যই বরাদ্দ রেখেছে টিম ম্যানেজম্যান্ট। প্রায় ৭ মাস পর হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজের জন্য ঘোষিত স্কোয়াডে মাশরাফিকেই রাখা হয়েছে অধিনায়ক।
অথচ গত জানুয়ারি মাসেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এক ম্যাচে সংবাদ সম্মেলনে এসে খোদ মাশরাফিই জানিয়েছিলেন, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় জাতীয় দলে নিজের জায়গা দেখেন না তিনি। সেখানে কি না জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে নেতৃত্বই দেবেন তিনি।
বিষয়টি খানিক খটকা লাগানোর মতোই। পারফরম্যান্সের কারণে দলে জায়গা পাওয়ার কথাও ভাবেন না মাশরাফি। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে তার বিকল্প না থাকায় খেলতেই হচ্ছে তাকে। এ বিষয়টা কীভাবে দেখছেন টাইগার অধিনায়ক?
আজ (শনিবার) ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি উত্তরে বলেন, ‘অধিনায়কত্ব নিয়ে আসলে বলতে চাই যে, এটি আমার ভাবনার বিষয় নয়। এটা টিম ম্যানেজম্যান্টের ভাবনার জায়গা। তাই এটা নিয়ে আমি একদমই ভাবছি না। কিংবা দল ঘোষণার আগেও আমি ভাবিনি। এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত, টিম ম্যানেজম্যান্টের বিষয়।’
শুধু অধিনায়কত্ব নিয়েই নয়, কথা ওঠে সাম্প্রতিক সময়ে মাশরাফির পারফরম্যান্সের ব্যাপারেও। পরিসংখ্যান সাক্ষী দিচ্ছে, সবশেষ দশ ওয়ানডেতে মাশরাফির উইকেটসংখ্যা মাত্র ১টি। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, প্রায় ১৮ বছরের ক্যারিয়ারের কখনওই এতো বাজে সময়ের মধ্যে যেতে হয়নি টাইগার অধিনায়ককে।
যার ফলে ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে প্রায় প্রতিটি ম্যাচই যেনো নিজেকে প্রমাণ করার একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যদিও মাশরাফির পরিষ্কার বক্তব্য, তিনি কখনওই প্রমাণ করার জন্য ক্রিকেট খেলেননি। সামনেও তা করবেন না।
এ প্রসঙ্গে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘দেখুন, প্রমাণ করার কোনো বিষয় নেই এখানে। আমি তো গ্যারান্টি দিতে পারব না যে, অবশ্যই পারফর্ম করবো। তবে একটা গ্যারান্টি দিতে পারবো যে আমি নিজের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করবো। যেকোনো খেলোয়াড়ের ব্যাপারে প্রশ্ন উঠতে পারে যে, সে তার শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করছে কি না। টিম ম্যানেজম্যান্ট থেকে মূল্যায়ন করা হতে পারে যে, খেলোয়াড়ের ডেডিকেশন ঠিক জায়গায় আছে কি না। এসব জায়গা প্রশ্নবিদ্ধ থাকলে কোনো খেলোয়াড়ের অনেক কিছু পরিবর্তন করা লাগতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগেও বলেছি যে এতদিন কাউকে প্রমাণ করে ক্রিকেট খেলিনি। নিজের চেষ্টায় ক্রিকেট খেলেছি। আর সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়ে বললে বলবো, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রশ্ন আমাকে করে লাভ নেই। আপনার (সাংবাদিক) যদি মনে হয়, আমার প্রমাণ করা উচিৎ- তাহলে বলবো যে, আমি তো প্রমাণ করার জন্য অবশ্যই ক্রিকেট খেলছি না। আমি বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলছি। বাংলাদেশ দলকে জেতানো আমাদের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের দায়িত্ব। আমরা এটাই নিশ্চিত করি যে, চেষ্টাটা যেন থাকে।’
এসএএস/জেআইএম