দেশজুড়ে

নীলফামারীতে চীনা কোম্পানির ২৯ শ্রমিক হাসপাতালে ভর্তি

নীলফামারীতে একটি কারখানায় অর্ধশতাধিক নারী শ্রমিক খিঁচুনিতে আক্রান্ত হওয়ার পর কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা সদরের টুপির মোড় এলাকায় চীনা কোম্পানি এভারগ্রিন বিডি লিমিটেডের পরচুলা তৈরির কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকদের মধ্যে এ রোগ দেখা দেয়। চিকিৎসকদের ধারণা, তারা গণহিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

নারী শ্রমিকরা জানান, পরচুলা তৈরির কারখানাটিতে প্রায় ২ হাজার নারী ও ৩০০ পুরুষ শ্রমিক কর্মরত। সকালের দিকে নিচ তলার নারী শ্রমিকরা খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। শুধু পরচুলা কারখানার নিচ তলার শ্রমিকরা আক্রান্ত হন। এক শ্রমিক খিঁচুনিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১০ মিনিটের মধ্যে আরও ১৫-২০ জন একই উপসর্গে আক্রান্ত হন। পরে নিচ তলার সব শ্রমিকের মধ্যে একই উপসর্গ দেখা দেয়।

শ্রমিকদের অভিযোগ, পরচুলার কাজ করার সময় হঠাৎ করে কিছু চুলের মধ্যে এক ধরনের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ওই গন্ধের গ্যাসে তারা মাথা ঘুরে মেঝেতে পড়ে যান। তারা অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাদের কারখানার বাইরে বের হতে দেয়া হচ্ছিল না। ভেতর থেকে এ খবর বাইরে ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষজন কারখানাটি ঘেরাও করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে শ্রমিকদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আশিকুর রহমান জানান, শনিবার বেলা ১১টা থেকে এভারগ্রিন বিডি লিমিটেডের পরচুলা তৈরির কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসতে থাকেন। কেউ কেউ অজ্ঞান অবস্থায় এসে ভর্তি হলেও তাদের জ্ঞান ফিরেছে।

তিনি বলেন, দুপুর ১টা পর্যন্ত ২৯ জন নারী শ্রমিক হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের সবাইকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের ধারণা, তারা গণহিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

নীলফামারীর সিভিল সার্জন রণজিত কুমার জানান, অনেক শ্রমিক বাড়ি চলে গেলেও দুপুরের পর দেখা যায় আতঙ্কে অনেক নারী শ্রমিক বাড়ি থেকে এসে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এটি প্যানিক সৃষ্টি করেছে।

এভারগ্রিন বিডি লিমিটেডের পরচুলা তৈরির কারখানায় ডিজিএম কাজি ফেরদৌসুল আলম বলেন, অসুস্থ শ্রমিকদের উপসর্গ একই রকম। একসঙ্গে এতো শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমরা নিজেরাও হতচকিত হয়ে পড়ি। এমন প্যানিক কেন সৃষ্টি হলো বুঝতে পারছি না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে অসুস্থ নারী শ্রমিকদের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার কোম্পানি বহন করবে।

জাহেদুল ইসলাম/আরএআর/এমএস