গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় দোকানসহ ৭টি ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বহুগ্রাম ইউনিয়নের কাউনীয়া ও দিস্তাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই বছর ধরে ওই এলাকার আবু জাফর মিয়া এবং মনোয়ার মিয়া ওরফে মানু মেম্বার ও বিরু মৃধার দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সকালের দিকে বলরামবাজার থেকে আবু জাফর মিয়ার সমর্থক ও একটি মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি মামুন শেখকে (৩৬) গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পর ওইদিন বিকেল ৫টার দিকে মানু মেম্বার ও বিরু মৃধার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ কাউনীয়া গ্রামের জাফর মিয়া বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। এসময় তারা জাফর মিয়ার সমর্থক ওই গ্রামের রাকিব শেখ, জোনা শেখ বাড়ি ও রওশন শেখের মুদি দোকান ও দিস্তাইল গ্রামের জাকির কাজির বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এলাকার বর্ষীয়ান মো. ইউনুচ শেখ (৮০) বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে অপরাজনীতি মুকসুদপুরের বহুগ্রাম ইউনিয়নের গাড়লগাতী, তারাইল, কাউনীয়া, দিস্তাইল,মাঝিগাতী ও হরিণহাটি গ্রামের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করে চলছে। ওইসব গ্রামের মানুষ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আগে সামাজিকভাবে যেকোনো বিষয় নিষ্পত্তি করা হতো। এখন দলাদলির কারণে তা সম্ভব নয়। ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে বিভাজন বেড়েই যাচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই এলাকায় জাফর মিয়া একসময় মাতুব্বরি ও সালিশ দরবার করতেন। তার একছত্র আধিপত্য রোধ করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল শেখ তার পক্ষের লোকজন দিয়ে প্রতিটি গ্রামে গ্রুপিং-এর সৃষ্টি করে একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ দাড় করেছেন।
তারা আরও বলেন, এরপর থেকে এলাকায় মানুষের মধ্যে দলাদলি ও দ্বন্দ্ব সংঘাত চরমভাবে বেড়ে যায়। মামলা, মোকাদ্দমা, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় হিসেবে দেখা দেয়। আর এ সবকিছুর পেছনে মদদ যুগিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে বহুগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল শেখের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তাকে একটি এসএমএস দেয়া হয়। কিন্তু তিনি এর কোনো জবাব দেননি। মুকসুদপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মীর্জা আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। থানায় একটি মামলা হয়েছে।
হুমায়ুন কবীর/এমএএস/এমকেএইচ