জাতীয়

বাড়তি ভাড়ায় বাসে কমেছে যাত্রী

‘অ্যাই! আসেন, আসেন। মিরপুর-১০, ১১, ১২।’স্যানিটাইজারের বোতল হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এভাবে উচ্চকণ্ঠে পথচারীদের ডাকাডাকি করছিলেন অল্পবয়সী এক হেলপার।

আজিমপুর মিরপুর রোডে বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত ‘সেফটি পরিবহন’ নামের বাসটির ভেতরে উঁকি দিতেই দেখা যায়, ড্রাইভার ছাড়া মাত্র দুইজন যাত্রী বসে আছেন। এ সময় পাশ কাটিয়ে বেশ কয়েকজন বাসচালককে সায়েন্স ল্যাবরেটরির অভিমুখে ছুটতে দেখা যায়। কিন্তু সেইফটি পরিবহনের বাসচালককে একই স্থানে মিনিট দশেক অপেক্ষা করতে দেখা যায়। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও যাত্রী না পেয়ে দুজন যাত্রী নিয়েই সামনে এগিয়ে যান ওই বাসচালক।

মঙ্গলবার (২ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর নীলক্ষেতে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশে দুই মাসেরও বেশি সময় গণপরিবহন বন্ধ থাকার পর গতকাল থেকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালু হয়। গণপরিবহন চালুর দ্বিতীয় দিনে আজ সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন রুটে আগের দিনের তুলনায় অধিক সংখ্যক বাস চলাচল করতে দেখা যায়। তবে বাসের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা ছিল অনেক কম।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে যেকোনো বাসের মোট আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা রয়েছে। বাস মালিকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে স্বাভাবিক সময়ের ভাড়ার চাইতে অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ অধিক ভাড়া আদায় করার অনুমতি দেয়া হয়।

মঙ্গলবার সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাস হাতেগোনা অল্প সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। রাস্তায় বাসের সংখ্যার তুলনায় তুলনামূলক কম যাত্রী দেখা যায়।

একদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়, অন্যদিকে অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া ধার্য করার কারণে অনেকেই বাসে যাতায়াত করছেন না। বাস ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

সকালে শাহবাগ মোড়ে মহাখালী বাসের জন্য অপেক্ষ করছিলেন লোকমান হোসেন। তিনি বলেন, এ সময়ে ভাড়া বেশি হলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নিরাপদ যাত্রার জন্য তিনি বেশি ভাড়া দিতে প্রস্তুত। তিনি বললেন, বেঁচে থাকলে আয়-রোজগার করা যাবে। কিন্তু টাকা বাঁচাতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন যাত্রী বলেন, ‘মিরপুরের একটি গার্মেন্টসে অল্প বেতনে চাকরি করি। আগে আসা-যাওয়া মিলিয়ে ৫০ টাকা খরচ হতো। ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির ফলে এখন তার ৮০ টাকা খরচ হবে। খরচ বাড়লেও তার বেতন বাড়েনি। এজন্য তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার বাস মালিকদের স্বার্থ দেখল কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা ভাবল না।’

এমইউ/এসআর/জেআইএম