দেশজুড়ে

চেয়ারম্যানের গাফিলতিতে ১০ টাকা কেজির চাল পাচ্ছে না দরিদ্ররা

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মালিখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারণে দুই মাস ধরে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ।

২০১৬ সালে এই কর্মসূচির আওতায় উপজেলার নয় ইউনিয়নের নির্দিষ্ট কার্ডধারীদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল বিতরণ শুরু হয়। মালিখালী ইউনিয়নের কার্ডধারীদের তালিকা প্রস্তুত ভুয়া ও মৃত ব্যক্তির নামে কার্ড ইস্যুসহ নানা অনিয়মের কারণে ৩০ এপ্রিল ওই ইউনিয়নের ডিলার মো. শামীম গাজীকে ১৫ দিনের কারাদণ্ডসহ জামানত বাজেয়াপ্ত এবং ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।

সেই সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নয় ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নতুন তালিকা প্রস্তুত করতে একটি কমিটি করা হয়। পাশাপাশি ওই ইউনিয়নে বিধি মোতাবেক নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ অনুয়ায়ী আট ইউনিয়ন থেকে মৃত ব্যক্তি, সরকারি অন্যান্য সুবিধাভোগীদের বাদ দিয়ে হালনাগাদ তালিকা সংশ্লিষ্ট দফতরে দেয়া হয়। ওই তালিকা অনুযায়ী গত দুই কিস্তির চাল বিতরণ করা হয়। কিন্তু উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুমন মন্ডল মিঠু এখনও তালিকা সরবরাহ না করায় গত দুই মাস ধরে চাল বিতরণ বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে নতুন ডিলার কৃষ্ণ বসু বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারশিপ পাওয়ার পর আমি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে ১৫ মে চালে ডিও গ্রহণ করে গোডাউন থেকে চাল উত্তলন করেছি। কিন্তু উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে একাধিক বার মালিখালী ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারীদের তালিকা চাওয়া হলে তিনি আমাকে তালিকা সরবরাহ করেননি। তাই আমি চাল বিতরণ করতে পারছি না। অফিস থেকে আমাকে জানানো হয়েছে হালনাগাদ তালিকা অফিসে জমা দেননি চেয়ারম্যান।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহনাজ পারভীন বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী যাচাই-বাচাই করে উপজেলার অন্য আট ইউনিয়ন থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির হালনাগাদ তালিকা সরবরাহ করলেও লিখিতভাবে নির্দেশনা দেয়ার পরও মালিখালী ইউনিয়ন থেকে তালিকা সরবরাহ করা হয়নি। তাই ডিলারকে তালিকা দেয়া সম্ভব হয়নি। যে কারণে চাল বিতরণ করতে পারেননি ডিলার।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সুমন মন্ডল মিঠু বলেন, যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ইউএনওর দেয়া কমিটির সদস্যদের নিয়েই যাচাই-বাছাই করে তালিকা প্রস্তুত করে এক সপ্তাহ আগে অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। ওই তালিকা যদি যথাযথভাবে করা না হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষ আমাকে তলব করছে না কেন? আমাকে তলব করলে আমি তার জবাব দেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, অন্য আট ইউনিয়ন যথা সময়ে যাচাই-বাছাই করে হালনাগাদ তালিকা সরবরাহ করেছে। কিন্তু মালিখালী ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান সঠিকভাবে এখনও তালিকা জমা দেননি। তিনি বারবার খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে সময় নিয়ে বিলম্ব করছেন। তাই চাল বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দুই-একদিনের মধ্যে তিনি তালিকা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এএম/পিআর