পদ্মার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে প্রচণ্ড স্রোতে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে বেশ কিছুদিন যাবৎ। তীব্র স্রোতের কারণে নদী পার হতে এখন দ্বিগুণেরও বোশি সময় লাগছে। কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের চারটি ঘাটের মধ্যে ১নং ঘাট পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ঘাটের পল্টুন পানিতে তলিয়ে গেছে। বাকি তিনটি দিয়ে ওঠানামা করছে ফেরির পরিবহন।
এ রুটে চলাচলকারী ১৭টি ফেরির মধ্যে মাত্র ৯টি দিয়ে সীমিত আকারে নদী পারাপার করা হচ্ছে। ফলে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ৬ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকে পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই তীব্র স্রোতের কারণে রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। সকালে আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়। এছাড়া এই রুটে ৮৭টি লঞ্চ ও শতাধিক স্পিডবোট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে যাত্রীরা ফেরিতেই পার হতে চাচ্ছেন।
বরিশাল থেকে আসা যাত্রী সুজন মাঝি জানান, নদীতে অস্বাভাবিক স্রোত। ফেরিই ঠিকমতো চলতে পারে না। সেখানে লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাওয়া তো জীবনের ঝুঁকি ছাড়া কিছুই না। তাই প্রায় ২ ঘণ্টা হলো ফেরির জন্য বসে আছি। কিন্তু ফেরি ঘাটে ফেরে খুব কম।
আটকে পড়া ট্রাকের চালক অসলাম বেপারী জানান, মোংলা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে আজ ১২ দিন ধরে ঘাটে এসে অপেক্ষা করছি। ঘাটের কাছে আসার পর বিআইডব্লিউটিসির আনসাররা ট্রাকের সিরিয়াল করে রাখে। কিন্তু সিরিয়াল আর শেষ হয় না। বেশি টাকা পেলেই পেছন থেকে ট্রাক পার করে দেয়। দূরপাল্লার ট্রাকগুলো মালামালসহ ১০-১২ দিন ধরে ঘাটে এসে অপেক্ষা করছে। চালক ও হেল্পারদের পকেটের টাকাও ফুরিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ঘাটে থাকাও কষ্ট হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ব্যবস্থাপক আবদুল আলীম মিয়া জানান, তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ রুটে চলাচলকারী ৬টি ডাম্প ফেরি চলতে পারছে না। এছাড়া তীব্র স্রোতের কারণে একটি রোরো ফেরি ইঞ্জিনের ক্ষমতা বাড়িয়ে চালানোর কারণে ইঞ্জিন কিছুটা বিকল হয়ে পড়েছে। সেই কারণে শাহ-মুখদুম ফেরিটি এখন নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে রয়েছে। ফলে মাত্র ৯টি ফেরি দিয়ে সীমিত আকারে নদী পারাপার করা হচ্ছে। পদ্মার দুই পাড়ে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে সহস্রাধিক যানবাহন।
নাসিরুল হক/এফএ/এমএস