দেশজুড়ে

পঞ্চগড়ে তিনদিন ধরে চা বাগান ও জঙ্গল কেটেও মিলল না বাঘ

পঞ্চগড়ে অবশেষে চা বাগান পরিষ্কার এবং জঙ্গল কেটেও বাঘের দেখা মেলেনি। সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলার মুহুরীজোত, উষাপাড়া, বাদিয়াগছ, সাহেবীজোত এলাকায় একটি চা বাগান ও জঙ্গলে বাঘের শাবকসহ মা-বাঘ রয়েছে স্থানীয়দের এমন কথা শুনে বাঘ ধরতে অভিযান শুরু করে বন বিভাগসহ স্থানীয় প্রশাসন। ৫০ জনের বেশি শ্রমিক দিয়ে কাটা হয় জঙ্গল, পরিষ্কার করা হয় পরিত্যক্ত চা বাগান।

শেষ পর্যন্ত বাঘের খোঁজ না পাওয়ায় শনিবার বিকেলে সেখানে বাঘ নেই বলে ঘোষণা দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন। এ সময় বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তা, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের মুহুরীজোত এবং তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের উষাপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল প্রায় চার একরের একটি চা বাগান।

পরিচর্যার অভাবে চাপাতা সংগ্রহ না করায় গাছ বড় হয়ে জঙ্গলে পরিণত হয় এলাকাটি। কিছুদিন ধরে দুটি বাঘের শাবকসহ একটি মা বাঘ সেই জঙ্গলে দেখেছেন বলে দাবি করেন স্থানীয় একাধিক অধিবাসী।

সর্বশেষ তিন দিন আগে বাগানের পাশে আবুল কালাম নামে এক কৃষকের একটি গরু বাঘের আক্রমণে মারা যায় বলে দাবি করেন তিনি। তিনিসহ আরও কয়েকজন বাঘ দেখার দাবি করেন। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশ ও বনবিভাগকে খবর দিলে বৃহষ্পতিবার দুপুরে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সচেতন থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। এতে বাঘ নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় লোকজন।

খবর পেয়ে বন বিভাগের একটি প্রশিক্ষিত দল এলাকায় আসেন বাঘ ধরতে। পরে চা বাগান মালিকপক্ষের সম্মতিতে স্থানীয় প্রশাসন চা বাগান পরিষ্কারসহ জঙ্গল কাটার জন্য ৫০ জনের বেশি শ্রমিক দিয়ে বাঘ খোঁজার অভিযান শুরু করেন। শুরু হয় চাঞ্চল্য। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য মানুষ সেখানে ছুটে যান বাঘ দেখতে। কিন্তু তিন দিনের বাঘ ধরার অভিযান শেষে দেখা মেলেনি বাঘ বা বাঘ শাবকের।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফ হোসেন বলেন, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাঘ খোঁজার অভিযান সমাপ্ত করা হয়েছে। সেখানে কোনো বাঘের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় লোকজন যেহেতু ওই এলাকায় বাঘ দেখেছেন বলে দাবি করার ফলে পাশে ভারত থেকে বাঘ আসতে পারে বলে ধারণ করা হয়। এজন্য ওই এলাকার মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

সফিকুল আলম/এমএএস/এমকেএইচ