দীর্ঘদিন হয়ে এলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থামছে না। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বরং তুলনামূলকভাবে বাড়ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক ব্যাপার। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
গতকাল সোমবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৯ জন এবং নারী চারজন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার হাজার ২৮১ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও দুই হাজার ১৭৪ জন। ফলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল তিন লাখ ১২ হাজার ৯৯৬ জনে। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন আরও দুই হাজার ৯৮০ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল দুই লাখ চার হাজার ৮৮৭ জনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘করোনা শুধু স্বাস্থ্যগত বিষয় নয়, এটি সামাজিক, অর্থনৈতিক, যোগাযোগ, ধর্ম, বাণিজ্য অর্থাৎ জীবনের সব কিছুকে ঘিরে রয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে করোনার সংক্রমণ আরও প্রলম্বিত হতে পারে আমাদের দেশে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে উদাসীনতা, করোনাসংক্রান্ত বিষয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে সমন্বয়হীনতা, লোকজনের স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা, স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ব্যাপারেও তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করাসহ নানাবিধ কারণ এ জন্য দায়ী।
আজ থেকে পুরনো ভাড়ায় ফিরছে গণপরিবহন। ‘যত আসন তত যাত্রী’ নীতিমালার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবিধি চলার কথা গণপরিবহনগুলোর। এ ব্যাপারে নজরদারি বাড়াতে হবে। করোনায় যেখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কথা বলা হচ্ছে সেখানে পাশাপাশি সিটে বসে যাওয়া কতটা স্বাস্থ্যসম্মত সেটি ভেবে দেখতে হবে। গণপরিবহনে স্বাস্থবিধি মানার ব্যাপারে কোনো বালাই নেই। তাছাড়া সিটিংয়ের নামে চিটিং তো ওপেন সিক্রেট। কাজেই এ ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ঘন ঘন হাত ধুতে হবে সাবান দিয়ে। নিরাপদ শারীরিক দূরত্বও মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে মাস্ক পরার ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে চাই সামাজিক উদ্যোগ। আক্রান্তদের সহজে চিকিৎসাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। সহজলভ্য করতে হবে শনাক্তকরণ। এছাড়া ভাইরাস প্রতিরোধে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। করোনার ভ্যাকসিন যেন বাংলাদেশও পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। করোনার কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এ অবস্থায় প্রতিরোধই হচ্ছে প্রতিকারের সর্বোৎকৃষ্ট উপায়। মনে রাখতে হবে নিজের ও পরিবারের সুরক্ষা নিজের হাতেই। এর ব্যতিক্রম হলে ক্ষতি কিন্তু নিজেরই।
এইচআর/জেআইএম