মতামত

অপঘাতে মুত্যু কেন রোধ করা যাচ্ছে না?

এটা খুবই দুঃখজনক যে, পানিতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে। এটাকে ‘নিয়তি’ বলে বসে থাকলে চলবে না। বরং মৃত্যুর কার্যকারণগুলো ব্যাখ্যা করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে সাঁতার শেখার ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ ব্যাপারে সচেতনতাও বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।

এবার নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় পুকরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চরজাব্বার ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চরজাব্বার গ্রামের বেলায়েতের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো- ওই গ্রামের বেলায়েতের মেয়ে সুইটি বেগম স্মৃতি (৪) এবং পাশের বাড়ির গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে ফারজানা বেগম (৫)। ওই দুই শিশু বাড়ির পুকুরপাড়ে খেলা করছিল। হঠাৎ অসাবধানতাবশত পুকুরে পানিতে পড়ে যায় তারা। পরে বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ধরনের শোকাবহ পরিস্থিতি কিছুতেই কাম্য নয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৫ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়, যা মোট শিশুমৃত্যুর ৪৩ শতাংশ। আর প্রতিদিন গড়ে ৪০টি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। বলতে গেলে শিশুর অন্যতম ঘাতক এই পানিতে ডুবে মৃত্যু। এই মৃত্যু রোধ করতে হলে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকে। শিশুরা জলাধারের কাছে যাতে যেতে না পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

এ ব্যাপারে বাড়াতে হবে সামাজিক সচেতনতা। গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে যে সমস্ত শিশুরা সাঁতার শেখার উপযোগী হয়েছে তাদেরকে অবশ্যই সাঁতার শেখাতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে স্থানীয় প্রশাসন, এনজিওসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে। সাঁতার না জানার কারণেই অধিকাংশ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। শুধু শিশুরাই নয় প্রাপ্তবয়স্কদেরও পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আমাদের দেশে সাঁতার শেখা বা শেখানোকে একটি অপ্রয়োজনীয় কাজ হিসেবে এখনো মনে করা হয়। এ ধরনের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শিশুরাই আগামী, তাদের রক্ষায় আরো যত্নশীল ও দায়িত্ববান হতে হবে।

এইচআর/এমএস