জাতীয়

নৌবাহিনীকে আনন্দ শিপইয়ার্ডের ট্যাঙ্কার হস্তান্তর

দেশের শীর্ষ জাহাজ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড শিপওয়েজ লিমিটেডের বানানো জ্বালানি তেল পরিবাহী ট্যাঙ্কার বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে আনন্দ শিপইয়ার্ডের বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য তৈরি করা তেল সরবরাহকারী মিলিটারী ট্যাঙ্কার হস্তান্তর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান। এর আগে মন্ত্রী আনন্দ শিপইয়ার্ড এ্যান্ড শিপওয়েজ-এর জাহাজ নির্মাণ ইয়ার্ড ঘুরে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, সমুদ্রের নিচের ব্লু ইকনমি (সমুদ্র অর্থনীতি) সন্ধানে দেশের জাহাজ নির্মাণ খাতের আরও সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বঙ্গোপসাগরের নিচে অমূল্য সম্পদ আহরণ করতে দেশেই অনেক বড় বড় জাহাজ প্রয়োজন।ট্যাঙ্কারটির শুভকামনা জানিয়ে শাহজাহান খান বলেন, আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড শিপওয়েজ বিশ্ববাজারে বড় বড় জাহাজ রপ্তানি করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তী উজ্জ্বল করছে। আগামীতে এই প্রতিষ্ঠান রপ্তানি বাজারে বিশ্বের শীর্ষ জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে পেছনে ফেলবে এবং বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে শীর্ষ জাহাজ নির্মাণকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন। সরকার আনন্দ শিপইয়ার্ডসহ দেশের সকল জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সব রকমের সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে নৌমন্ত্রী জানান। বিশ্বের শীর্ষ জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে প্রতিযোগিতাপূর্ন টেন্ডারে অংশ নিয়ে নৌবাহিনীর জন্য ট্যাঙ্কারটি নির্মাণের কাজ পায় আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড শিপওয়োজ লিমিটেড। ২৭৭৪ ডিডব্লিউটি (ডেড ওয়েট টন) ওজনের এবং ৮০ মিটার আয়তনের এই অয়েল ট্যাঙ্কারটি দিয়ে দু’টি যুদ্ধজাহাজের তেল ভরা যাবে। ঘণ্টায় ২৪.৫ কিলোমিটার গতির চলমান অবস্থায় তেল সরবরাহে সক্ষম এই ট্যাঙ্কারটি যুদ্ধ জাহাজ এবং শান্তিপূর্ণ মহড়ায় সহায়ক জলযান হিসাবে ব্যবহৃত হবে। আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড শিপওয়েজের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহেল বারী আনন্দ শিপইয়ার্ডের সক্ষমতার ওপর আস্থা রাখার জন্য নৌবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ খাতের ইতিহাসে একে একটি মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড শিপওয়েজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা বারী, গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য মো: মঞ্জুরুল ইসলাম (লিটন), বাংলাদেশ নৌবাহিনী, নৌ মন্ত্রণালয় এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ৩০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে এ পর্যন্ত ছোট-বড় ৩১৫ টি জাহাজ নির্মাণ করেছে আনন্দ শিপইয়ার্ড। ২০০৮ সালে ডেনমার্কে প্রথম জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। জাহাজ রপ্তানির প্রথম তিন বছরে আনন্দ শিপইয়ার্ড জার্মানি, ডেনমার্ক, মোজাম্বিক, মালদ্বীপে ১৩ টি বিশ্বমানের জাহাজ রফতানি করেছে। আগামী দুই বছরে ৯৮০ কোটি মূল্যের ১০টি জাহাজ আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করবে আনন্দ শিপইয়ার্ড।