দেশজুড়ে

জাগো নিউজের সংবাদে মা হারা আহাদ পেল ভালোবাসার পরশ

সদ্য মা হারিয়েছে ৩ মাস বয়সী আহাদুজ্জামান। মাতৃশোক বোঝার বুদ্ধি এখনও তার হয়নি। মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই দুধের জন্য কাঁদছিল ক্ষুধার্ত শিশুটি।

আহাদের সেই কষ্ট তুলে ধরে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কম। সোমবার (১৬ নভেম্বর) ‘যৌতুকের বলি মা, দুধের জন্য কাঁদছে ৩ মাস বয়সী সন্তান’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় জাগো নিউজে।

সেই প্রতিবেদন পড়ে নাম ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার উত্তরার একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত এক নারী জাগো নিউজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে আহাদের জন্য উন্নত ব্র্যান্ডের গুড়া দুধ, কাপড় ও প্রসাধনীসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র পাঠিয়ে দেন।

জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জিয়াউল হক জিয়া ও মফস্বল সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের পক্ষে মাগুরা জেলা প্রতিনিধি মো. আরাফাত হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরা সদর উপজেলার নালিয়ারডাঙ্গি গ্রামে শিশুটির নানি (একমাত্র অভিভাবক) মোছা. ছাহেরা বেগমের হাতে এসব উপহার সামগ্রী তুলে দেন।

এ সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নগদ অর্থ প্রদান করেন এবং সরকারি যাকাত ফান্ডের অর্থ প্রদানের আশ্বাস দেন।

জেলা তথ্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম, সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ খানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মাগুরা সদর উপজেলার নালিয়ারডাঙ্গী গ্রামের মো. হালিম শেখের মেয়ে মোছা. আসমা বেগমের সঙ্গে একই উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের নূর আলীর ছেলে মহব্বত আলীর এক বছর তিন মাস আগে বিয়ে হয়।

বিয়ের পর থেকেই মহব্বত আলী যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। এরই মধ্যে তিন মাস আগে ওই দম্পতির ঘর আলো করে একটি ফুটফুটে সন্তানের জন্ম নেয়। কিন্তু তারপরও যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন বন্ধ হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) স্বামীর রডের আঘাতে আসমা বেগম গুরুতর জখম হয়ে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই দিন পর হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়।

কিন্তু দুনিয়ায় রেখে যান তার তিন মাস বসয়ী সন্তান মো. আহাদুজ্জামানকে। পরে ওই দুধের শিশুকে নিয়ে বিপাকে পড়েন তার হতদরিদ্র নানাবাড়ির লোকজন।

আহাদুজ্জামানের একমাত্র অভিভাবক তার বৃদ্ধ নানি মোছা. ছাহেরা বেগম এসব উপহার সামগ্রী পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জাগো নিউজসহ পরোপকারী ওই নারীর সার্বিক মঙ্গল কামনা করে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।

তবে আহাদুজ্জামানের একমাত্র অভিভাবক তার বৃদ্ধ নানিকে একটা ভাতার কার্ড করে দেয়া গেলে বাচ্চাটাকে মানুষ করতে পারবেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

আরাফাত হোসেন/এফএ/এমকেএইচ