দেশজুড়ে

‘একাধিক সম্পর্কে জড়িত’ সন্দেহে পারভিনকে খুন করল পরকীয়া প্রেমিক

একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন এমন ধারণা থেকেই কথিত প্রেমিকাকে খুন করলেন তার প্রেমিক। খুন করে সেই মরদেহ জঙ্গলে ফেলে চলে যান। তবে তার মাফলারের (গলাবদ্ধ শীতকাপড়) কারণে ধরা পড়েন প্রেমিক।

গত ৭ জানুয়ারি রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া এলাকা থেকে অর্ধগলিত অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে নারীর পরিচয় শনাক্ত এবং ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া উপজেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নারীর প্রেমিক ট্রাকচালক আবুল খায়েরকে (৪৯) আটক করে পুলিশ।

আটকের পর আবুল খায়ের দায় স্বীকার করে একাধিক সম্পর্কের কারণেই পারভিনকে খুন করেছেন বলে জানিয়েছেন কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদ উল্লাহ।

নিহত নারী রেহেনা পারভিন (৩৭) হাটহাজারী উপজেলার ইছাপুর এলাকার প্রবাসী সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। বাড়ি ইছাপুরে হলেও দু’মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে রেহেনা পারভিন চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন আতুরার ডিপোর হাশেম বাজার এলাকায় মসজিদ সংলগ্ন ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আবুল খায়ের জানান, প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে পাঁচ বছর আগে পারভিনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার ছেলে মাহমুদ হাসানের (২২) ‘ওস্তাদ’ ট্রাকচালক আবুল খায়েরের। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পারভিনের থাকার ঘরভাড়াসহ যাবতীয় খরচ বহন করতে থাকেন আবুল খায়ের। নিয়মিতই পারভিনের বাসায় যাতায়াত ছিল তার। এলাকার মানুষও ধারণা করেছেন তারা স্বামী-স্ত্রী। সমস্যার সৃষ্টি হয় পারভিনের একাধিক সম্পর্কের বিষয়টি আবুল খায়েরের নজরে এলে। পারভিনের বাসায় গিয়ে অন্য পুরুষের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না আবুল খায়ের। তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

তিনি আরও জানান, গত ১ জানুয়ারি আবুল খায়ের ট্রাকযোগে কয়লা নিয়ে রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট এলাকায় যাওয়ার পথে পারভিনকে টাকা দেয়ার কথা বলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রামের অক্সিজেনে ডেকে আনেন। রাঙামাটির একটি কটেজে রাতযাপনের কথা বলে ওই নারীকে নিয়ে যান রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে। সেখানে ট্রাকের মধ্যেই রাত সাড়ে ৯টায় আবুল খায়ের শীতের মাফলার দিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করেন। পরে রাত সাড়ে ১০টায় কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া রেস্টহার্ড পুলিশ ক্যাম্প এলাকার রাস্তার পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে মরদেহ ফেলে দেন খায়ের।

ওসি মো. শহিদ উল্লাহ জানান, পারভিনকে হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানায় তার ছেলে বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আবুল খায়ের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাউখালী থানার এসআই মো. আব্দুস সালাম ও জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম আবুল খায়েরকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার রাতেই বায়েজিদ থানা পুলিশে তাকে হস্তান্তর করা হয়।

শংকর হোড়/এসজে/এমকেএইচ