পৌরসভা নির্বাচনে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় মুখর কিশোরগঞ্জ পৌর এলাকা। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে অলিগলি। নির্বাচনী এলাকায় দিনভর প্রচারণা চালাচ্ছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। নিজেদের পক্ষে ভোট চেয়ে ভোটারদের দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রতি। তবে নাগরিকদের ভাবনা, যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নেবেন তারা।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. পারভেজ মিয়া ও বিএনপি প্রার্থী সাবেক ভিপি মো. ইসরাইল মিয়া। এছাড়া দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল গণি ঢালি লিমন শেষ মুহূর্তে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এতে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী। তবে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী দুই দলের প্রার্থীই।
এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পারভেজ মিয়ার নির্বাচনী মাঠে সরব মহিলা আওয়ামী লীগ। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মী পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করছেন। অংশ নিচ্ছেন পথ সভা আর মিছিল-মিটিং-এ। এদিকে প্রচারণার শেষ দিনে আজ বৃহস্পতিবার সকালে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নৌকার প্রচারণায় যোগ দেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
সকালে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সাফিয়া খাতুন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুরাইয়া বেগম ইভা ও সেলিনা খাতুনের নেতৃত্বে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ গণসংযোগ করে। শহরের বত্রিশ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তারা নৌকার পক্ষে ভোট চান। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি দিলারা বেগম আছমা, সাধারণ সম্পাদক বিলকিছ বেগমসহ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিএনপি প্রার্থী হাজী মো. ইসরাইল মিয়া গণসংযোগ করছেন। প্রচারণার শেষ দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের নির্বাচনী অফিসে ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে পৌর এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন।
মেয়র প্রার্থী ছাড়াও প্রতিটি অলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
তবে মুখর ভোটের মাঠে প্রার্থী বাছাইয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন সাধারণ ভোটাররা। সৎ, যোগ্য ও এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন, এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করার কথা বলছেন তারা।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার জামিয়া রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘ভোটের আগে সবাই ভালো ভালো কথা বলে। আমাদের মন গলানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গত প্রায় দুই বছর ধরে জামিয়া রোডের ড্রেনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এলাকার মানুষ দুর্ভোগে থাকলেও এতে কারও মাথা ব্যথা নেই।’
পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলম ফয়সাল বলেন, ‘নির্বাচন এলেই আমাদের কদর বাড়ে। কিন্তু ভোটের পর কেউ আমাদের খবর নেয় না। তাই এবার দেখেশুনে ভোট দেব।’
আগামী ১৬ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর ও কুলিয়ারচর পৌরসভায় নির্বাচন হবে। কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা হচ্ছে, ৭১ হাজার ৮৪ জন। ৯টি ওয়ার্ডে ভোটযুদ্ধে লড়ছেন, ৪ জন মেয়র প্রার্থী, সাধারণ আসনের ৫৯ জন ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের ২২ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী।
নূর মোহাম্মদ/এমএসএইচ/জেআইএম