ঝালকাঠিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছেন নারী-শিশুসহ শত শত রোগী। এনিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হাসপাতালে ডায়রিয়ার রোগীর জন্য ১৩টি বিছানা রয়েছে। বাধ্য হয়ে রোগীরা হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলার নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল থেকে শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। জেলা সদর হাসপাতালের পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও রোগী বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা।
গত এক মাসে জেলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৪৬১ জন। এরমধ্যে গত সাত দিনে ৭০৭ জন এবং গত ২৪ ঘণ্টায় দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানান, তীব্র গরমে গত এক সপ্তাহে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত এক হাজার মানুষ। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন দেড় হাজারেরও বেশি রোগী। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক।
এদিকে জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী, সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী, সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাফর আলী দেওয়ান হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি বলেন, গরম, যথেচ্ছ খাবারসহ নানা কারণে মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালে স্যালাইন ও ওষুধ সংকটে চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মুনিবুর রহমান জুয়েল বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দিতে আমরা যথাযথ চেষ্টা করছি। ইডিসিএল থেকে স্যালাইন ও ওষুধ সরবরাহ কম থাকায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স স্বপ্নিল সমু বলেন, প্রতিদিন যে হারে ডায়রিয়া রোগী আসছে তাতে ডাক্তার-নার্সসহ আয়াদের পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৩৪ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল হাসান বলেন, এ মাসের শুরু থেকে ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। হঠাৎ গরম ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকার কারণে এমনটি হতে পারে।
ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী বলেন, অন্য সময়ের চেয়ে এবছর ডায়রিয়া আক্রান্তের হার অনেক বেশি। করোনা ও ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দিতে ইতোমধ্যে ডাক্তার ও নার্সরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মো. আতিকুর রহমান/আরএইচ/জেআইএম