নাটোর শহরতলীর ‘হাজরা নাটোর’ এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী কল্পনা পাহানের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে পাঁচ হাজার টাকার চেক তুলে দেয়া হয়। জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজের পক্ষে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সালাহ উদ্দীন-আল-ওয়াদুদ কল্পনাকে চেক হস্তান্তর করেন।
এর আগে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা সুদ ব্যবসায়ীর কবল থেকে কল্পনার বসতভিটা দ্রুত সময়ের মধ্যেই দখলমুক্ত করার আশ্বাস দেন। ‘হাজরা নাটোর’ এলাকার কল্পনা পাহানের কিডনির সমস্যা হলে তিনি সুদ কারবারি খুশি বেগমের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নেন। এরপর কয়েক ধাপে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তিনি। কিন্তু সুদ বাবদ খুশি বেগম তিন লাখ টাকা দাবি করেন। এরই এক পর্যায়ে একদিন দলবল নিয়ে বাড়িতে এসে ভয়ভীতি দেখিয়ে একটা ফাঁকা স্ট্যাম্পে তার স্বামী গোহনু পাহানের স্বাক্ষর নেন তারা। এর সপ্তাহখানেক পর তাদের দুই শতাংশ জমির ওপর নির্মিত কাঁচাবাড়ি থেকে তাকে তাড়িয়ে দেন সুদ ব্যবসায়ী খুশি বেগম। এখন সেখানে পাকা দালান তুলে বসবাস করছেন তিনি।
দলিল থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে জায়গার দখল নেই কল্পনা পাহানের। অন্যের জমিতে কাজ করে কোনোভাবে বেঁচে আছেন তিনি। এ বিষয়ে কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন খুশি বেগম।
একই এলাকার সামছুন্নার, রহিমা বেগমও সুদ কারবারি খুশি বেগমের খপ্পরে পড়ে বসতভিটা বিক্রি করে নিঃস্ব হয়েছেন। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে তা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহার নজরে আসে। তখন থেকেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়। কয়েকদিনের অনুসন্ধানে সুদের ভয়াবহতার সত্যতা পাওয়ায় সুদ ব্যবসায়ী খুশি বেগমকে থানায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ খুশি বেগম ও ভুক্তভোগীদের থানায় নিয়ে আসে। সেখানে ভুক্তভোগী সামসুন্নাহার বাদী হয়ে খুশি বেগমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী কল্পনা পাহানের বসতভিটা দখল করে নেয়া ও কথিত সুদের টাকার জন্য রহিমা বেগমকে নির্যাতনের ঘটনা উঠে আসে। পরে খুশি বেগমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
রেজাউল করিম রেজা/এসআর/এমকেএইচ