দেশজুড়ে

তাদের মুখের হাসি কেড়েছে লকডাউন

সারা দেশের ন্যায় মেহেরপুরেও চলছে সরকারের কঠোর লকডাউন। এ লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন ফুটপাথের কারিগররা। হচ্ছে না আয়। পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন তারা।

মেহেরপুর শহর, মুজিবনগর, গাংনী উপজেলা শহর, বামন্দী বাজার, রাইপুর, হেমায়েতপুরসহ বিভিন্ন স্থানে অন্তত পাঁচ শতাধিক ছোট-ছোট কারিগর ফুটপাথে ব্যবসা করতেন। জীবিকার তাগিদে কেউ চর্মকার, কেউ তালা, ছাতা, হারিকেন মেরামতের কাজ করতেন। তবে লকডাউনের কারণে তাদের জীবিকার পথটি যেন বন্ধ হতে বসেছে।

কয়েকজন ফুটপাথে বসলেও প্রশাসনের তৎপরতায় অধিকাংশ কারিগর শহরে বসতে পারছেন না। ফলে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন তারা।

জেলার গাংনী উপজেলার রেজাউল চত্বরে বটগাছের ছায়ায় মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় চর্মকার সমর দাসকে।

তিনি বলেন, আগে যেখানে ৪০০-৫০০ টাকা রোজগার হতো সেখানে এখন সারা দিনে আয় হয়েছে মাত্র ৬০ টাকা। সংসারে রয়েছে স্ত্রী-ছেলেসহ ছয়জন। কীভাবে এ টাকা দিয়ে তাদের আহারের ব্যবস্থা করবো?

লকডাউন আর করোনার কারণে মানুষ বাজারে না আসায় আয়ের পথটি তার বন্ধ। সরকারি কোনো সহযোগিতাও পাননি বলে জানান তিনি।

শুধু সমর দাস নয় তার মতো ফুটপাথের সকল কারিগরদের অবস্থা একই।

গাংনীর হাটবোয়ালিয়া রোডের তালার কারিগর আব্দুর রশীদ বলেন, প্রতিদিন তালা মেরামত ও চাবি তৈরিসহ টুকিটাকি কাজ করে ৩০০-৪০০ টাকা আয় হতো। লকডাউনের কারণে আয় প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। দিনে এখন ১০০ টাকা আয় করাই কষ্টকর।

ছাতার কারিগর আল আমিন বলেন, রোদ কিংবা বৃষ্টি সবসময় ছাতা ব্যবহার করা হয়। আগে লোকজনের সমাগম ছিল, তখন প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা রোজগার হতো।

তিনি আরো বলেন, এখন আয় একেবারেই নেই। গ্রামে-গ্রামে ঘুরে ১০০-১৫০ টাকা আয় হয়। তা দিয়ে সন্তানদের আহার যোগাড় করা ও পড়ালেখার খরচ মেটানো সম্ভব হয় না। লকডাউন আমাদের রুটি-রুজি কেড়ে নিয়েছে। সরকারি কোনো সহযোগিতাও পাচ্ছি না।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মনসুর আলম বলেন, লকডাউনে ফুটপাথের ব্যবসায়ীদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা আসলে তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হবে।

আসিফ ইকবাল/এসএমএম/এমএস