দেশজুড়ে

জীবিকার মহিষজোড়া ছিনতাই, ডুকরে কাঁদছেন গাড়োয়ান

একজোড়া মহিষের জন্য একটু পরপর ডুকরে কেঁদে উঠছেন গাড়োয়ান রসুল ফকির। মহিষজোড়াই তার জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ছিল। মহিষ দুটি ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। চার লাখ টাকা ঋণ করে মহিষজোড়া কিনেছিলেন রসুল।

সোমবার (৩ মে) ভোরে নাটোরের সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের বিয়াশ চারমাথা এলাকা থেকে একদল দুর্বৃত্ত রসুলের মহিষজোড়া ছিনিয়ে নিয়ে যায়। গাড়িয়াল রসুল পাশের বিয়াশ চকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিয়াশ চকপাড়া গ্রামের রসুল ফকির, গাড়াবাড়ি গ্রামের বাচ্চু, ঠেঙ্গাপাকুড়িয়া গ্রামের ছালাম ও সরিষাবাড়ি গ্রামের আব্দুল আলীম পাশের এলাকাগুলোতে মহিষের গাড়ি চালিয়ে ধান ও ভুট্টা পরিবহন করতেন। সোমবার ভোর ৪টায় গাড়াবাড়ি গ্রামের হযরত নামের এক কৃষক তার ভুট্টা বহনের জন্য ওই চার গাড়োয়ানকে ভাড়া করেন।

গাড়োয়ান বাচ্চু, সালাম ও আলীম একই সময়ে মহিষের গাড়ি নিয়ে হযরতের ভুট্টার গুদামে পৌঁছে গেলেও রসুলের দেরি হয়ে যায়। একাকি মহিষের গাড়ি নিয়ে ডাহিয়া ইউনিয়নের বিয়াশ চার মাথার গাড়াবাড়ি ব্রিজে পৌঁছাতেই পাঁচজনের একটি সংঘবদ্ধ দল তার গতিরোধ করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা রসুলকে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে মারধর শুরু করে। রসুল অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মহিষ দুটি নিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। ভোরের আলো ফোঁটার পর স্থানীয়রা রসুল ফকিরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে রসুল ফকির বলেন, ‘আমি আশা এনজিও এবং কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে চার লাখ টাকা ঋণ নিয়ে দুই মাস আগে মহিষজোড়া কিনেছিলাম। বোরো ধান ও ভুট্টা কাটার মৌসুমে প্রতিদিন গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতাম। ভাড়ার টাকা থেকে সংসার খরচ চালিয়ে ধীরে ধীরে ঋণের টাকাও পরিশোধ করছিলাম। এখন আমি ঋণ কিভাবে পরিশোধ করবো আর সংসার কিভাবে চালাবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর-এ আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে।’

এমআরআর/জিকেএস