দেশজুড়ে

মামার ওপর প্রতিশোধ নিতেই খুন করা হয় শিশু মহিবুল্লাহকে

নাটোরের গুরুদাসপুরে মামার ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মহিবুল্লাহ নামে ছয় বছরের এক শিশুকে গলাকেটে হত্যা করে ১৩ বছরের এক কিশোর।

পুলিশ ওই কিশোরকে গ্রেফতারের পর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (৮ মে) বেলা একটায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এসব কথা জানান। গ্রেফতার কিশোরের বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলায়।

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, সিংড়া উপজেলার গোটিয়া মহিষমারী গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ইসাহক আলীর ছেলে শিশু মুহিবুল্লাহ তার মার সঙ্গে প্রায় এক মাস আগে পাশের উপজেলা গুরুদাসপুরে নানার বাড়ি বেড়াতে যায়। গত বৃহস্পতিবার (৬ মে) বিকেলে মোবাইল ফোনে কার্টুন দেখতে দেখতে বাড়ির বাইরে যায় শিশুটি। কিন্তু সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও সে আর ফিরে না এলে সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ করেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায় না।

পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে এক ভুট্টার জমিতে শিশুটির বস্তাবন্দি গলা কাটা লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, এরপর পুলিশ তদন্তে নামে। নিহত শিশু মহিবুল্লাহর মামা ১২ বছর বয়সী সোহান জানায়, সে প্রতিবেশী এক কিশোরকে চাকু ধার দিতে দেখেছে। এরপর পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর একেক সময় একেক কথা বলতে থাকে। এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে সে মহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে।

কারণ হিসেবে সে জানায়, এর আগে শিশুটির মামা সোহান তার মাথা ন্যাড়া করে দেয়। এরপর থেকে সে প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ খুঁজছিল। কিন্তু সোহানের শক্তি বেশি থাকায় সে কিছু করে উঠতে পারছিল না। অপরদিকে সে মহিবুল্লাহর ফোন নিয়ে একটু গেম খেলতে চাইলে সে দিত না। এ কারণে সে প্রতিশোধ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মহিবুল্লাকে পাখির বাসা দেখানোর কথা বলে সে পাশের ভুট্টা খেতে নিয়ে গিয়ে সেখানে চাকু দিয়ে জবাই করে লাশ ফেলে আসে। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং তার কাছ থেকে রক্তমাখা ছুরি ও মোবাইল উদ্ধার করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জুবায়ের, সহকারী পুলিশ সুপার জামিল আকতার, গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

রেজাউল করিম রেজা/এমআরআর