সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ঈদে বাড়ি ফিরছে মানুষ। কয়েক দিন ধরে দেশের অন্যান্য নৌ-রুটের মতো মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাটেও যাত্রীর চাপ বেড়েছে। লাশ কিংবা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স পার করার সময় হুড়োহুড়ি করে ফেরিতে ওঠে পড়ছে যাত্রীরা।
এ অবস্থায় করোনা বিস্তাররোধে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে রোববার (৯ মে) সকাল থেকে মানিকগঞ্জে তিন পাল্টুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বারোবারিয়া, টেপড়া বাসস্ট্যান্ড ও সিংগাইরের ধল্লা ব্রিজ এলাকায় চেকপোস্ট বসান।
চেকপোস্টে বিজিবি সদস্যরা পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরি ঘাটগামী অনেক যানবাহনকে ফেরত পাঠান। এরপরও অনেক যাত্রী হেঁটে কিংবা বিভিন্ন উপায়ে ফেরি ঘাটে পৌঁছেন।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের টেপড়া এলাকায় চেকপোস্টের নেতৃত্বে ছিলেন শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিএম রুহুল আমিন রিমন। এসময় একটি প্রাইভেটকারকে ফেরত পাঠালে প্রাইভেটকারে থাকা দম্পত্তি ইউএনওর ওপর চড়াও হন। ক্ষিপ্ত হয়ে ইউএনওর দিকে তেড়ে আসেন এক নারী। ইউএনওর সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। উপস্থিত অনেকেই সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেন। তার মারমুখি আচরণে হতবাক হন সবাই।
নাজনীন আক্তার নামে ওই নারী জানান, প্রাইভেটকারযোগে স্বামীসহ কুষ্টিয়া যাচ্ছিলেন। তার স্বামী সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। পথে এসে তারা জানতে পারেন পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি বন্ধ। এ কারণে আরিচা ঘাটে এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু টেপড়ায় চেকপোস্টে তাদের ঘাটে যেতে বাধা দেয়া হয় এবং আগতকে ফেরত যেতে বলা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এ নির্দেশ মেনে তারা ফিরেও যাচ্ছিলেন। কিন্তু ইউএনওর সঙ্গে থাকা কেউ একজন লাঠি দিয়ে তাদের প্রাইভেটকারের ডান পাশের লুকিং গ্লাস ভেঙে দেন। এতেই ক্ষুব্ধ হন তিনি।
নাজনীন আক্তার আরও বলেন, আমার ভুল হলে জরিমানা করবে। কিন্তু গাড়ি ভাঙলো কেন। এটা কোনো আইন হলো। একই অভিযোগ করেন তার স্বামী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মামুনুর রশিদও।
তিনি বলেন, ইউএনওর সঙ্গে থাকা কয়েকজন অতিউৎসাহী হয়ে গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলেছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
এ বিষয়ে শিবালয় ইউএনও বিএম রুহুল আমীন রিমন জানান, পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে যাত্রীর চাপ ঠেকাতে টেপড়া এলাকায় চেকপোস্টে আগত গাড়ি ফেরত পাঠানো হচ্ছিল। সবার মতো ওই নারীর প্রাইভেটকারটিও ঘুরিয়ে দেয়া হয়। এতেই তিনি ক্ষুব্ধ হন। গাড়ির লুকিং গ্লাস ভাঙার বিষয়টি জানা নেই বলে জানান ইউএনও।
বি.এম খোরশেদ/এএইচ/এমকেএইচ