খেলাধুলা

সুজনের দুর্দান্ত শেষ ওভারে বিফলে গেল ইমনের ফিফটি

সুজনের দুর্দান্ত শেষ ওভারে বিফলে গেল ইমনের ফিফটি

তৃতীয় রাউন্ড পর্যন্ত ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও ওল্ড ডিওএইচএসের অবস্থা ছিল সমানে সমান। দুই দলেরই প্রথম তিন ম্যাচের মধ্যে জয় একটি, পরাজয় একটি ও পরিত্যক্ত ছিল একটি করে ম্যাচ। তবে নেট রানরেটে খানিক এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম অবস্থানে ছিল ব্রাদার্স, ঠিক পরেই ছিল ডিওএইচএস।

Advertisement

সোমবার চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিল ব্রাদার্স। সুজন হাওলাদার অসাধারণ ডেথ বোলিংয়ে মাত্র ২ রানের ব্যবধানে জয় পেয়েছে তারা। চার ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরে উঠে গেছে গোপিবাগের দলটি। অন্যদিকে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জয় পাওয়া হলো না ডিওএইচএসের।

ম্যাচে আগে ব্যাট করে মাইশুকুর রহমানের ফিফটিতে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় ব্রাদার্স। জবাবে ডানহাতি ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমনের ব্যাটে ভালোভাবেই এগুচ্ছিল ডিওএইচএস। ১৯তম ওভারে ৬৪ রান করে ফেরেন ইমন। পরে শেষ ওভারে ব্রাদার্সের পক্ষে ম্যাচ জিতে নেন সুজন।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা খানিক রয়েসয়েই করেছিলেন ডিওএইচএসের দুই ওপেনার রাকিন আহমেদ ও আনিসুল ইসলাম ইমন। তবে উইকেট পড়তে দেননি তারা। চলতি টুর্নামেন্টে চার ম্যাচের মধ্যে তৃতীয়বার পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়েন এ দুই ডানহাতি ওপেনার।

Advertisement

ইনিংসের দশম ওভারের প্রথম বলে জুটি ভাঙেন রাহাতুল ফেরদৌস। দলীয় ৫৭ রানের মাথায় স্ট্যাম্পিং হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ২ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩১ বলে ৩৩ রান করেন রাকিন। দ্বিতীয় উইকেটে মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে জুটি বাঁধেন আনিসুল ইমন।

শুরুতে খানিক ধীরে খেলতে থাকেন মাহমুদুল জয়। তবে অপরপ্রান্তে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলে দলকে জয়ের পথেই রাখেন আনিসুল ইমন। ইনিংসের ১৫তম ওভারে আলাউদ্দিন বাবুর পরপর দুই বলে ছয় ও চার হাঁকিয়ে রান রেটটাও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন তিনি।

পরের ওভারেই পূরণ করেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি হাফসেঞ্চুরি। পরের ওভারে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে সাকলাইন সজীবের ডেলিভারির ঠিকানা করেন সোজা সীমানার ওপারে। যার ফলে সমীকরণ নেমে আসে ১৮ বলে ২৩ রানে।

সুজন হাওলাদার করেন ইনিংসের ১৮তম ওভারটি। সেই ওভারে দুই চারের মারে ১০ রান তুলে নেন ইমন ও জয়। পরে ১৯তম ওভারের প্রথম তিন বলে ৫ রান এলে, সমীকরণ দাঁড়ায় ৯ বলে ৮ রানের। এরপর থেকেই শুরু হয় ডিওএইচএসের গড়বড় পাকানো।

Advertisement

মানিক খানের করা সেই ওভারের চতুর্থ বলে রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে ডট খেলেন ইমন। পরের বলে সজোরে হাঁকালেও ধরা পড়ে যান শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়ানো জুনায়েদ সিদ্দিকীর হাতে। ফলে সমাপ্তি ঘটে ইমনের ৫০ বলে ৩ চার ও ৪ ছয়ের মারে ৬৪ রানের ইনিংসের।

শেষ বলে ১ রান নিয়ে সমীকরণ ৬ বলে ৭ রানে নামান নতুন ব্যাটসম্যান রায়ান রাফসান রহমান। কিন্তু শেষ ওভারে আর ম্যাচটি জেতাতে পারেননি রাফসান। অবশ্য শেষ ওভারে জেতানোর দায়িত্ব ছিল মাহমুদুল জয়ের কাঁধে। কিন্তু ওভারের দ্বিতীয় বলে ২ রান নিতে গিয়ে রানআউট হন ৩৩ বলে ৩৪ রান করা জয়।

বাকি থাকা ৪ বলে মারে ২ রান নিতে সক্ষম হন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান প্রিতম কুমার ও রায়ান রাফসান রহমান। শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩ রান। সুজন হাওলাদারের করা সেই ওয়াইড ইয়র্কার ডেলিভারিটি আদৌ ওয়াইড লাইনের ভেতরে ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারে ডিওএইচএস।

এতে অবশ্য ম্যাচের ফল বদলানোর সুযোগ নেই। মাত্র ১৩৯ রানের পুঁজি নিয়েও ২ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে ব্রাদার্স। মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েও ১৩৭ রানের বেশি করতে পারেনি ডিওএইচএস। ব্রাদার্সের পক্ষে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন রাহাতুল ফেরদৌস এবং মানিক খান। চার ওভারে মাত্র ১৫ রান খরচ করেছেন রাহাতুল।

এর আগে ব্রাদার্সকে লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেয়ার পূর্ণ কৃতিত্ব মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মাইশুকুর রহমানের। ইনিংসের ১০ ওভার শেষে ব্রাদার্সের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেট ৪৮ রান। সেখান থেকে ৪৯ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন মাইশুকুর ও রাহাতুল। দলীয় ১১৮ রানে ২৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন রাহাতুল।

তবে অবিচল ছিলেন মাইশুকুর। শেষ পর্যন্ত ৪টি করে চার ও ছয়ের মারে ৪৮ বলে ৬৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। মাইশুকুরের ব্যাটিং ঝড়ে শেষ ৪ ওভারে ৪৯ রান পায় ব্রাদার্স। যা দলের জয়ের ভিত গড়ে দেয়।

এসএএস/জিকেএস