দেশজুড়ে

‘আমাগো সব কাম-কাইজ বন্ধ অইয়্যা গ্যাছে, খামু কী?’

ঝালকাঠিতে ট্রাক সেলে প্রতিদিন সয়াবিন তেল, ডাল ও চিনি বিক্রি করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) টিসিবি। প্রতিদিন দুটি ট্রাকে বিভিন্ন এলাকায় এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবির পণ্য নিতে এসে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউ। গাদাগাদি করে পণ্য কিনছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝালকাঠিতে টিসিবির পণ্য বিক্রির জন্য আটজন ডিলারকে নিয়োগ দেয়া হয়। এর মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। এ কারণে তাদের পণ্য দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমানে শহরে তিনজন ডিলার টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন। তারা শহরের আড়তদারপট্টি, স্টেশন রোড ও চাঁদকাঠি এলাকায় ডাল, চিনি ও তেল বিক্রি করছেন।

তিনজন ডিলারের দোকানেই উপচে পড়া ভিড় রয়েছে। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা এসব পণ্য কিনছেন। তেলের লিটার ১০০ টাকা ছাড়া অন্য সব পণ্য ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে টিসিবিতে।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আড়তদারপট্টিতে দুপুরের পর থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছে মানুষ। অনেকের মাস্ক ঝুলছে থুতনিতে। গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে তারা পণ্য কিনছেন।

শহরের নতুন কলাবাগান এলাকার দিনমজুর সোহাগ হাওলাদার বলেন, ‘আমাগো সব কাম-কাইজ বন্ধ অইয়্যা গ্যাছে। খামু কী? ঘরে কোনো খাবার নাই। ডাল, চিনি ও তেল কিনতে আইছি। লাইনে দাঁড়াইছি, কখন কিনতে পারমু জানি না।’

গাদাগাদি করে দাঁড়িয়েছেন কেন জানতে চাইলে সোহাগ বলেন, ‘আমাগের কিছু অইবে না, আল্লায় রক্ষা করবে।’

আড়তদারপট্টি এলাকায় মাস্ক না পরে লাইনে দাঁড়ানো এক নারী বলেন, ‘মাস্ক লাগে না। লাইনে দাঁড়াইয়্যা থাকলে ঘামাইয়্যা যায়। মাস্ক পরলে শ্বাস বন্ধ হইয়্যা যাইবে।’

এ ব্যাপারে আড়তদারপট্টির টিসিবির ডিলার জাহাঙ্গীর হোসেন বাবুল বলেন, ‘আমরা পণ্য বিক্রির সময় ক্রেতাদের লাইনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেই। এমনকি দূরত্ব বজায় না রাখলে পণ্য দেয়া হবে না বলেও ঘোষণা দেই। কিন্তু কে শোনে কার কথা! কিছুক্ষণ ঠিক থাকলেও আবার হুমড়ি খেয়ে পড়ে।’

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আহমেদ হাসান বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। টিসিবির পণ্য বিক্রি এলাকায় যতক্ষণ আমাদের গাড়ি থাকে ততক্ষণ সবাই শৃঙ্খলা বজায় রেখে মালামাল ক্রয় করেন। গরিব মানুষ এখানে পণ্য কিনতে আসছেন, কিন্তু তারা স্বাস্থ্য সুরক্ষা বোঝেন না।’

মো. আতিকুর রহমান/এসআর/এমকেএইচ