করোনাভাইরাস রোধে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও জয়পুরহাটে পশুর হাট লোকে লোকারণ্য। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পাঁচবিবি পৌর এলাকায় এ হাট বসে।
সরেজমিনে হাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা ও গরুর সংখ্যা বেশি হওয়ায় পা ফেলার জায়গা নেই। হাটের বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক ছিল না। অনেকে মাস্ক থুতনিতে ঝুলিয়ে রেখেছেন। ক্রেতারা কোনো সামাজিক দূরত্ব না মেনেই গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে দরকষাকষি করছেন।
হাট কমিটির পক্ষ থেকে মুখে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রচারণা করা হলেও চা-পানের দোকান ও খাবার দোকানগুলোতে সামাজিক দূরত্ব না মেনে জটলা দেখা গেছে।
হাটে আসা পাঁচবিবি উপজেলার বিনধারার আবুল হোসেন, সাইফুল ইসলাম, বড়মানিক এলাকার গোলজার হোসেন, সমসাবাদ গ্রামের আব্দুস সাত্তার, ধামুইরহাট উপজেলার আমাইর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনসহ অনেক বিক্রেতার ভাষ্য, এই করোনার মধ্যেও হাটে না এসে উপায় নেই। গরু বিক্রি করতেই হবে। অতিরিক্ত গরমের কারণে মাস্ক পকেটে আছে। বাড়িতে গিয়ে ভালো করে সাবান দিয়ে গোসল করে ফেললেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
হাটে গরু কিনতে আসা পাঁচবিবি মোহাম্মদপুর এলাকার মাসুদুল আলম মোহন ও কালাই উপজেলার ধরাইল গ্রামের আব্দুল মান্নান বলেন, মাস্ক আছে তবে গরমের কারণে পরতে পারিনি। এতো ভিড়ের মধ্যে জনগণকে সচেতন করা কঠিন একটা কাজ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাঁচবিবি গরুরহাটের ইজারাদার হারুন অর রশিদ বলেন, খামারিদের অনুরোধে গরুর হাট বসানো হয়েছে। হাটের বিভিন্ন জায়গায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাটে আসা মানুষদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। সবাইকে সচেতন করতে মাইকিং করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরমান হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ওয়াজেদ আলী জানান, অনেক কষ্ট করে করোনা আক্রান্তের শতকরা হার কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে এভাবে হাট চলতে থাকলে করোনা সংক্রমণের হার বাড়বে।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহমেদ ভূঞা জানান, গরুর হাট চালু বা বন্ধের এখতিয়ার জেলা প্রশাসনের। এখানে পুলিশের কিছু করণীয় নেই। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের কাছে গরুর হাট বন্ধের কোনো নির্দেশনা আসেনি।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম বলেন, পাঁচবিবিতে গরুর হাট বসানোর ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। ব্যাপারটি দেখছি। হাটগুলোকে বড় জায়গায় ও প্রয়োজনে কয়েক ভাগে বিভক্ত করা হবে।
রাশেদুজ্জামান/এসআর/জিকেএস