নাম রোজা মনি (২)। বয়স এক পেরিয়ে দুইয়ের কোঠায়। এই বয়সে অন্য আট দশটা শিশুর মতো সে হাঁটতে পারে না, কথাও বলতে পারে না। অর্থের অভাবে তার চিকিৎসাও করাতে পারছেন না বাবা-মা।
রোজা মনি শেরপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কসবা কাঠগড় মহল্লার জুব্বার মিয়া ও রোকসানা বেগম দম্পতির দ্বিতীয় কন্যা। জুব্বার পেশায় নির্মাণশ্রমিক এবং রোকসানা গৃহিণী। তাদের সংসারে সিনহা নামে চার বছরের আরেকটি মেয়ে রয়েছে।
এই চারজনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি জুব্বার মিয়া। কিন্তু করোনাকালীন পরিস্থিতি তাদের অনেকটাই দুর্বল করে দিয়েছে। একদিকে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন, অন্যদিকে অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসাও করাতে পারছেন না তিনি।
রোজা মনির বাবা জুব্বার মিয়া বলেন, গত বছর থেকে করোনার কারণে আয়-রোজগার একদম নেই। কিছু জমানো টাকা ছিল। তা দিয়ে মেয়েটার চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু এখন আর পেরে উঠছি না।
তিনি আরও বলেন, দুই বছর বয়সে রোজা মনির ওজন ১০ কেজির বেশি থাকার কথা। কিন্তু তার ওজন মাত্র ছয় কেজি। চিকিৎসক বলেছেন, তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসা না করালে সে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এখন কী করব, কোথায় টাকা পাবো ভেবে পাচ্ছি না। মেয়ের কষ্ট দেখলে আমার বুক ফেটে কান্না আসে।
রোজা মনির মা রোকসানা আক্তার জানান, মেয়েটা দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। সে সবসময় কান্নাকাটি করে, খেতে চায় না। শরীরে জ্বর থাকে। হাত-পা বেশিরভাগ সময় বাঁকা করে রাখে। ঘাড় নিচু করে থাকে। অন্য সাধারণ শিশুর মতো রোজা মনি বসতে পারে না।
স্থানীয় আব্দুল হাই বলেন, রোজা মনির হাত-পা দিন দিন চিকন হয়ে যাচ্ছে। ভালো চিকিৎসককে না দেখালে হয়তো শিশুটার বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে।
শেরপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ এবং ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন বলেন, রোজা মনির পরিবার আবেদন করলে পৌরসভা থেকে তাদের আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।
এ ব্যাপারে যোাগাযোগ করা হলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা.আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, রোজা মনির জন্ম থেকে কিছু সমস্যা আছে। প্রসবের সময় হয়তো সে মস্তিষ্কে আঘাত পেয়েছে। তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাতে হবে। পাশাপাশি রোজা মনিকে কিছু শারীরিক ব্যায়াম ও প্রতিদিন থেরাপি দিতে হবে। নয়তো ধীরে ধীরে সে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে যাবে।
ইমরান হাসান রাব্বী/এসআর/জেআইএম