২৫০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য ও দিনাজপুরের রাজ পরিবারের প্রথা অনুযায়ী ঐতিহ্যবাহী কান্তনগর মন্দির থেকে কান্তজীউ বিগ্রহ নৌপথে দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরেক রূপ কান্তজীউ বিগ্রহ নিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে পুনর্ভবা নদীর দুই তীর ভক্ত-পুণ্যার্থীর ভিড়ে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।
দিনাজপুরের রাজবংশের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৫০০ বছর আগে। সেই বংশের রাজা প্রাণনাথ ১৭২২ সালে দিনাজপুর শহর থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে কাহারোল উপজেলার কান্তনগর এলাকায় কান্তজিউ মন্দির নির্মাণকাজ শুরু করেন। ১৭৫২ সালে মন্দিরের কাজ শেষ করেন তার পোষ্যপুত্র রামনাথ। সেই সময় থেকেই কান্তজিউ বিগ্রহ ৯ মাস কান্তনগর মন্দিরে এবং তিন মাস দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে রাখা হয়। জন্মাষ্টমীর একদিন আগে কান্তজিউ বিগ্রহ ধর্মীয় উৎসব-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে রাজবাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
সেই রীতি অনুযায়ী শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টায় ঐতিহ্যবাহী কান্তনগর মন্দির থেকে পূজা অর্চনা শেষে কান্তজিউ বিগ্রহ পুনর্ভবা নদীর কান্তনগর ঘাটে আনা হয়। সেখান থেকে বিশাল নৌবহর নিয়ে যাত্রা শুরু হয় সাধুঘাটের উদ্দেশ্যে। দীর্ঘ প্রায় ২৫ কিলোমিটার নদীপথে কান্তনগর ঘাট থেকে সাধুরঘাট পর্যন্ত শতাধিক ঘাটে কান্তজিউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকা ভেড়ানো হয়।
নৌকাযোগে দিনাজপুর আসার সময় সনাতন ধর্মাবলম্বী হাজার হাজার ভক্ত নদীর দুই কূলে কান্তজিউ বিগ্রহকে দর্শন এবং বাড়ির বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য শাকসবজি কান্তজিউ বিগ্রহকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে আসে। এ সময় নদীর দুই কূল সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্যদের ভিড়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।
সকালে কান্তজিউ বিগ্রহ নৌপথে নিয়ে যাওয়ার উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল। পূজা অর্চনা শেষে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টায় কান্তজিউ বিগ্রহ রাজবাড়ি কান্তজিউ মন্দিরে স্থাপন করা হবে।
এমদাদুল হক মিলন/এসআর/এএসএম