মঙ্গলবার গ্র্যান্ড ফাইনাল দিয়ে পর্দা নেমেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) তৃতীয় আসরের। শ্বাসরূদ্ধকর ফাইনালের একেবারে শেষ বলে বরিশাল বুলসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দারুণ টিম স্পিরিট দেখিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দলকে তিন উইকেটে হারিয়ে উল্লাসে মাতে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। টানা তৃতীয়বার বিপিএল শিরোপায় চুমু খেলেন মাশরাফি। এবারের বিপিএলের খুঁটিনাটি জাগোনিউজ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। ব্যাটিংয়ে সেরারাএবারের আসরে ঢাকা ডায়ানামাইটসের অধিনায়ক সর্বাধিক রান সংগ্রহ করেছেন। ১০ ম্যাচে করেন ৩৪৯ রান এই শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তী। এছাড়া কুমিল্লার ইমরুল কায়েস ১২ ম্যাচে ৩১২, চিটাগাংয়ের তামিম ইকবাল ৯ ম্যাচে ২৯৮, বরিশালের মাহমুদউল্লাহ করেছেন ২৭৯ রান।এবারের আসরে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি খেলেছেন বরিশাল বুলসের ক্যারিবীয় ওপেনার এভিন লুইস। টুর্নামেন্টের একমাত্র সেঞ্চুরিটিও তার। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঢাকা ডাইনামাইটসের বিপক্ষে ১০১ রান করে অপরাজিত ছিলেন বরিশালের এই ওপেনার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আরেক ক্যারিবীয় তারকা ক্রিস গেইলের। চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৯২ রান করে অপরাজিত থাকেন এই দানবীয় ব্যাটসম্যান। তবে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৩টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন চিটাগাংয়ের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কমপক্ষে পাঁচ ইনিংস ব্যাট করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সেরা গড় কুমিল্লার পাকিস্তানি অলরাউন্ডার আসহার জাইদির। ৮ ইনিংস ব্যাট করে ৫৩.৭৫ গড়ে ২১৫ রান সংগ্রহ করেন তিনি। এরপরেই ৪১.০০ গড়ে রয়েছেন রংপুর রাইডার্সের জহুরুল ইসলাম অমি। তবে চার ইনিংস ব্যাট করে তিন ইনিংসে অপরাজিত থাকায় ১৪২ গড় ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান মারলন স্যামুয়েলসের। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ছক্কা মারার রেকর্ডটিও ক্যারিবিয়ানদের দখলে। সর্বোচ্চ ১২ টি ছক্কা মারেন ক্রিস গেইল। এরপর ইমরুল কায়েস, তিলকারত্নে দিলশান এবং আসহার জাইদি ১০টি করে ছক্কা হাঁকান। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ বাউন্ডারি মেরেছেন লঙ্কান লিজেন্ড কুমার সাঙ্গাকারা। ৩৫ চার মেরেছেন তিনি। তারপরেই রয়েছেন কুমিল্লার ইমরুল কায়েস। ৩২ চার মেরে দ্বিতীয় অবস্থানে এই বাংলাদেশি। সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী
নাম
দল
ম্যাচ
ইনিংস
রান
সর্বোচ্চ
কুমার সাঙ্গাকারা
ঢাকা ডাইনামাইটস
১০
১০
৩৪৯
৭৫
ইমরুল কায়েস
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
১২
১২
৩১২
৬৭
তামিম ইকবাল
চিটাগাং ভাইকিংস
৯
৯
২৯৮
৬৯
মাহমুদউল্লাহ
বরিশাল বুলস
১৩
১২
২৭৯
৫১
তিলকারাত্নে দিলশান
চিটাগাং ভাইকিংস
১০
১০
২৬০
৬৭
বোলিংয়ে সেরা যারাবোলিং বিভাগেও ছিল বিদেশিদের দাপট। টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত বল করা আবু হায়দার রনি ফাইনালে উইকেট শুন্য থাকায় তাকে ছাড়িয়ে সেরা বোলার হলেন ক্যারিবীয় কেভন কুপার। মাত্র ৯ ম্যাচ খেলে ২২ উইকেট নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ পেসার। সেরা বোলিং ১৫/৫। আর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের উদীয়মান পেসার আবু হায়দার রনি ১২ ম্যাচে নিয়েছেন ২১ উইকেট নিয়ে তার পরেই অবস্থান করছেন। এছাড়া শ্রীলংকার থিসারা পেরেরা এবং সাকিব আল হাসান পেয়েছেন ১৭টি করে উইকেট।এবারের আসরের সেরা বোলিং ফিগারটাও ছিল কেভন কুপারের। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ১৫ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও থিসারা পেরেরা এবং আল-আমিন হোসেন একবার করে পাঁচ উইকেট পান। টুর্নামেন্টে দুইবার চার উইকেট পেয়েছেন আবু হায়দার রনি। আর এবারের আসরের একমাত্র হ্যাটট্রিকটি করেছেন বরিশালের আল-আমিন হোসেন। সিলেট সুপারস্টার্সের বিপক্ষে এই কৃতিত্ব দেখান এই পেসার। সবচেয়ে মজার ব্যপার বড় বড় তারকাদের ভীড়ে টুর্নামেন্টে সবেচেয়ে বেশি মেডেন ওভার নিয়েছেন ঢাকা ডাইনামাইটসের নাসির হোসেন। মাত্র ২৪ ওভার বল করেই ৩টি মেডেন পেয়েছেন এই অলরাউন্ডার। তবে রান দেয়ায় সবচেয়ে কৃপণ ছিলেন কুমিল্লার আসহার জাইদি। ৩৭ ওভার বল করে ওভার প্রতি ৪.৭৮ গড়ে ১৭৭ রান দিয়েছেন এই পাকিস্তানি। সেরা উইকেটশিকারী
নাম
দল
ম্যাচ
রান
উইকেট
সেরা
কেভন কুপার
বরিশাল বুলস
৯
২০৫
২২
৫/১৫
আবু হায়দার
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
১২
৩১৬
২১
৪/১৯
থিসারা পেরেরা
রংপুর রাইডার্স
১২
২৪৫
১৮
৫/২৬
সাকিব আল হাসান
রংপুর রাইডার্স
১১
২৬২
১৮
৪/১৬
আসহার জাইদি
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
১১
১৭৭
১৭
৪/১১
আরটি/আইএইচএস/পিআর