অনেক আশা করে ছয় বছর আগে ঢাকার খামারবাড়ি এবং নাটোর হর্টিকালচার সেন্টার থেকে ভিয়েতনামি খাটো জাতের নারিকেল গাছের চারা কিনেছিলেন কৃষি উদ্যোক্তা সেলিম রেজা। ৫০০ টাকা করে কেনা ১০৭টি গাছ রোপণ করেন সোয়া দুই বিঘা জমিতে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে করতে থাকেন পরিচর্যা। দু-একটি গাছে নারিকেল ধরলেও তা বড় হওয়ার আগেই পড়ে যায়।
সম্প্রতি তার বাগানে নারিকেল গাছের গোঁড়ায় পচন রোগ দেখা দেয়। ক্ষোভে বাগানের সব গাছই কেটে ফেলেন তিনি। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। কখনো নারিকেল গাছ চাষের চিন্তা করবেন না বলেও শপথ করেন।
সম্প্রতি নাটোর সদর উপজেলার আহমেদপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি উদ্যোক্তা সেলিম রেজা বলেন, গাছের চারা ক্রয়, কীটনাশক ছিটানো ও পরিচর্যা করতে ছয় বছরে ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর পরও কোনো ফল আসেনি। এতে ক্ষোভে সব গাছ কেটে ফেলি। তার অভিযোগ, বর্তমানেও মুনাফালোভী একটি চক্র ভিয়েতনামি খাটো জাতের নারিকেলের চারা এদেশে আমদানি করে। আকর্ষণীয় ছবিসহ সামাজিক মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করে। এরপর চারা বিক্রি করে মুনাফা লুটে নেয়। ভিয়েতনামের খাটো জাতের এ নারিকেল গাছে ফলন হয় না বরং রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে মাটি ও আবহাওয়ার ক্ষতি করে। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন যারাই ভিয়েতনামি খাটো জাতের নারিকেল চাষ করেছেন প্রত্যেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
আর কোনো কৃষক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে নাটোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক মাহমুদুল ফারুক বলেন, ভিয়েতনামী খাটো জাতের নারিকেল গাছের পরিচর্যার নিয়ম রয়েছে। সঠিক পদ্ধতিতে পরিচর্যা করলে এমনিটি হওয়ার কথা নয়।
তিনি আরও বলেন, দেশী জাতের নারিকেল গাছে তেমন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ভিয়েতনামী খাটো জাতের নারিকেল গাছের প্রতি মাসে পরিচর্যা করতে হয়। শুকনো ডালপালা কেটে ফেলতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে পানির ব্যবস্থা করতে হয়। এছাড়া কোনো অবস্থাতেই মূল ডগা কাটা যাবে না। এরপরও রোপণ ও পরিচর্যার সমস্যার কারণে প্রায় তিন বছর ধরে খাটো জাতের নারিকেলের চারা বিক্রি সরকারিভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
রেজাউল করিম রেজা/এসজে/এএসএম