দেশজুড়ে

পাহাড়ি আলু খেয়েই দিন পার করছেন বন্ধ বাগানের চা শ্রমিকরা

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার বড়থল চা বাগান সাত দিন ধরে বন্ধ। নেই সাপ্তাহিক রেশন, নেই মজুরি। এতে দেখা দিয়েছে আর্থিক সংকট। খাদ্যের অভাব পূরণে শুধু পাহাড়ি আলু খেয়েই দিন পার করতে হচ্ছে বাগানের ৩০০ শ্রমিক পরিবারকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিকিৎসার অবহেলায় বাগানের চা শ্রমিক শীতু বাউড়ির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৯ অক্টোবর বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এ সময় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মারামারিরও ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধ করে দেয়। কাজ বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি ও রেশন (সাড়ে তিন কেজি আটা) বন্ধ রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে ওই চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা অভাবের তাড়নায় পাহাড়ি আলু সিদ্ধ করে শিশুদের খাওয়াচ্ছেন। এ সময় কথা হয় অহিলা কর্মকার, বাসন্তি রিকমন, সীমা রিকমন ও কুনতি ম্রিধার সঙ্গে। তারা বলেন, আমাদের পরিবারে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা পাহাড় থেকে মাটি খুঁড়ে আলু সংগ্রহ করে খাদ্যের অভাব পূরণ করছি।

বড়থল চা বাগানের শ্রমিক নেতা শ্যামল বাউড়ি, লছমন কৈরী, নিয়তি বাউড়ি ও চন্দন কর্মকারে বলেন, ২৯ অক্টোবর ৭ নম্বর সেকশনের নতুন লাইনের শীতু বাউড়ি শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ সময় তার স্বজনরা চিকিৎসা সেবার জন্য বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে বাগানের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ যানবাহন দিয়ে তাকে সহযোগিতা না করায় ওই দিন দুপুরে মারা যান শীতু বাউড়ি (৪৫)।

তাদের অভিযোগ, এ নিয়ে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করায় কর্তৃপক্ষ সেদিন থেকে বাগানে শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে দয়ে। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে।

উত্তরভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ শাহিদুজ্জামান ছালিক বলেন, কাজ বন্ধ থাকায় তারা অভাবে আছে। আমি শুনেছি কাজ না থাকায় শ্রমিকরা অভাবে পড়ে পাহাড়ি আলু খাচ্ছে। বিষয়টি একান্ত বাগান কর্তৃপক্ষের। তবে আমি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। সাত দিন ধরে বাগান বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়থল চা বাগানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক নেয়াজ বখস। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কোম্পানির স্বার্থে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। শ্রমিকরা অনেক বাড়াবাড়ি করছে। আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

আব্দুল আজিজ/এসজে/জিকেএস