ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’র প্রভাবে সারারাত ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছে নগরবাসী। বৃষ্টির দিনে দোকানে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন রাজধানীর শাহবাগ বটতলা ফুল মার্কেটের দোকানিরা। ৫১টি ফুলের দোকানে নেই পাঁচজন ক্রেতাও। যারা এসেছেন তারাও জরুরি প্রয়োজনে।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোনো দোকানে ৪০ টাকা, কোনো দোকানে ৩০০ টাকা, কোনো দোকানে এক হাজার টাকার বেচাকেনা হয়েছে। আবার কোনো কোনো দোকানে বিক্রিও হয়নি। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকটি দোকান বন্ধও রয়েছে।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে শাহবাগের ফুল মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, একজন ফুলের দোকানদার হাতে মোবাইল নিয়ে অলস সময় পার করছেন। কেউ চিন্তিত মনে বসে আছেন, কেউ আবার বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ঘূর্ণিঝড় অতিবাহিত হওয়ার সময়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।
মোবাইল নিয়ে বসে থাকা ‘ফুল বাহার দোকান’র আকরাম রহমান সুজন বলেন, ‘অলস সময় পার করছি। লোকজন নাই তাই মোবাইল নিয়ে বসে আছি। সকাল থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে। কাস্টমার নাই। এমনি দিনে ১০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়। কিন্তু আজ কত হয় জানি না।’
কত টাকার ফুল বিক্রি হলো জানতে চাইলে শাহবাগের অহনা ‘ফুল কুটির’র দোকানি ইমরান মাদবর বলেন, ‘সকাল থেকে এখন (দুপুর ১২টা) পর্যন্ত ৩০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। কাস্টমার নাই। বৃষ্টির মধ্যে মানুষ বের হতে পারতেছে না। বেচাবিক্রি কেমনে হবে? ৫০টি দোকান থাকলেও কাস্টমার আছে ২-৩টা।’
ককশিটের কাজ করা ‘রাজু আর্ট গ্যালারি’র কর্মচারী মো. হৃদয় বলেন, ‘সকাল থেকে একজন কাস্টমারও আসে নাই। কোনো কাজও পায় নাই। আগের কিছু অর্ডার আছে। সেই কাজগুলো করতেছি।’
এসময় বৃষ্টিতে কয়েকজনকে ফুল কিনতে আসতে দেখা যায়। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও জরুরি প্রয়োজনে এসেছেন বলে জানান তারা। দুজন কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীকেও দেখা যায় ফুল কিনতে। জানতে চাইলে রোকসানা আক্তার নামের ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এমনিতেই ঘুরতে ঘুরতে এখানে চলে আসলাম। তাই ফুল দেখছি। কোনো উপলক্ষ নেই। ভালো লাগছে তাই একটা ফুল কিনলাম।’
শাহবাগে ফুল কিনতে আসা মো. রাশেদ বলেন, ‘দেশের বাইরে থেকে লোক আসছে। তাদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ফুল কিনতে হচ্ছে। বৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যা হলেও ফুল কিনতে আসলাম।’
এদিকে, বৃষ্টির কারণে অনেকে দোকান খুলে বসে থাকলেও কিছু দোকান বন্ধই রয়েছে রাজধানীর পরিচিত এই ফুলের মার্কেটটিতে। বৈরি আবহাওয়া মার্কেটের বেচাকেনা নিয়ে কথা হয় শাহবাগ বটতলা ফুল মার্কেটের আনিকা পুষ্প বিতানের মালিক ও শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালামের সঙ্গে।
এসময় তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মার্কেটে ৫১টি দোকান রয়েছে। কিছু দোকানদার আসেনি। কাস্টমারও কম। স্বাভাবিক দিনে যে কাস্টমার আসতো আজ তা নেই বললেই চলে। তারপরও আমরা খুলে বসে আছি যদি কাস্টমার আসে। যদি বেচাবিক্রি কিছু হয়।’
আরএসএম/এআরএ/জিকেএস