নিজেদের সৌন্দর্য কাজে লাগিয়ে পুরুষদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক, পরে ব্ল্যাকমেইল। এছাড়া চলাফেরায় আভিজাত্য। বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিজনেস ক্লাস ফ্লাইটে প্রতি মাসে সাত-আটবার ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যাওয়া-আসা। বিমানবন্দরে র্যাম্প কার সুবিধা। এসবের আড়ালেই চলতো মাদকব্যবসা।
Advertisement
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) এই চক্রের চার সদস্যকে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছে পাওয়া যায় ১৯ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা।
গ্রেফতাররা হলেন- মেহেরুন্নেসা মিম (২৪), জোহুরা বেগম (৩০), জালাল মৃধা (৩৫) ও নাসির উদ্দিন (৩৮)।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে গুলশান ও মোহাম্মদপুর সার্কেলের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম শনিবার সকাল থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালায়।
Advertisement
অভিযান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চক্রটি সাধারণত ইয়াবা বহন করতো না। তারা ইয়াবাপাচার এবং সরবরাহের সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের সম্পর্ক ছিল ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। ইয়াবা যাচাই-বাছাই করতে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে প্লেনে যেতো। মাসে সাত-আটবার যাতায়াত ছিল কক্সবাজারে।
রাজধানীতে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত। মূলত তাদের ছত্রচ্ছায়ায় কাজ করতেন গ্রেফতাররা। এরকম বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং সেসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এই চক্র টেকনাফ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করতো। পরে সেগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে পাঠানো হতো রাজধানীতে। এগুলো আবার ঢাকায় তাদের বাসায় মজুত করে রাখতো। পরে এগুলো দেওয়া হতো রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ডিলার এবং খুচরা বিক্রেতাদের কাছে। তাদের মেইন এজেন্ট টেকনাফ এবং কক্সবাজার এলাকার।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে অন্য একটি অভিযানে আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় ওই চারজনকে।
Advertisement
ইয়াবাপাচারের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, আগের তুলনায় নারীদের সংশ্লিষ্টতা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন অভিযানে ইয়াবা-আইস ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকায় নারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে নারীদের কাজে লাগিয়ে আরও বেশি তৎপর হচ্ছে অপরাধী চক্রগুলো। ফলে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছি, চালাচ্ছি অভিযান।
আরএসএম/জেডএইচ/এমএস