জাতীয়

২০২০ সালের তুলনায় নারী অভিবাসন বেড়েছে তিনগুণ

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৪ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি কর্মী বিদেশে গেছেন। তাদের মধ্যে ৯৪ শতাংশ কর্মী গেছেন সৌদি আরব ও ওমান। সর্বোচ্চ ৭৬ শতাংশ গেছেন সৌদি আরবে। চলতি বছর বিভিন্ন দেশে পাঠানো অভিবাসী কর্মীদের মধ্যে ৬০ হাজারেরও বেশি কর্মী নারী। নারী শ্রমিকদের ৬৮ শতাংশ সৌদি আরবেই গেছেন।

Advertisement

এছাড়া কুমিল্লা জেলা থেকে সর্বোচ্চ অভিবাসী বিদেশে গেছেন। এ বছর দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর হার কমে গেছে। মূলত পারিবারিক বা আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে অদক্ষ কর্মীরাই বিদেশে গেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (আরএমএমআরইউ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ থেকে শ্রম অভিবাসনের গতিপ্রকৃতি-২০২১, সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আরএমএমআইউ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী।

Advertisement

তিনি বলেন, অভিবাসনের গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ বাংলাদেশের শ্রম অভিবাসনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। ২০২০ সালে কেবল ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৯৯ কর্মী অভিবাসন করতে পেরেছিলেন। ২০১৯ সালের তুলনায় এ সংখ্যা ৬৯ শতাংশ কম। ২০২১ সালে এ সংখ্যাটি বেড়ে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৮৯৩ জনে পৌঁছেছে। তবুও ২০২১ সালে অভিবাসন ২০১৯ সালের তুলনায় ৩২ শতাংশ কম। ২০২১ সালে সৌদি আরব এককভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য, যেখানে ৭৬ দশমকি ১৫ শতাংশ কর্মী যাচ্ছে।

চলতি বছর সর্বমোট বিদেশ থেকে কতজন ফিরে এসেছে সে সংক্রান্ত পরিসংখ্যান না থাকলেও আউটপাসের মাধ্যমে চলতি বছর ৬০ হাজার ১৯৯ জন অভিবাসী কর্মী ফিরে এসেছেন।

অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, এ বছর কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে মালয়েশিয়ার সঙ্গে সরকারের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর বড় ঘটনা। সমঝোতা স্মারকে শ্রমিকের অধিকারের যে ভালো ভালো কথা রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করলে অভিবাসন আরও বাড়বে ।

তিনি বলেন, করোনাকালে প্রবাসী কর্মীরা নানা সমস্যায় পড়েছের। কিন্তু প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমস্যার প্রয়োজনীয় সমাধান করেছে। চলতি বছরের শেষে এসে নতুন কর্মী ও প্রবাসীদের ফিরে যাওয়ার উড়োজাহাজ ভাড়া বেড়ে গেছে। আগে যে দেশে যাওয়ার ভাড়া ৪৫ হাজার টাকা ছিল, এখন সেসব দেশের ভাড়া ৭০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা হয়ে গেছে। অভিবাসনের ক্ষেত্রে এটি একটি উদ্বেগজনক দিক।

Advertisement

অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী আরও বলনে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর এক লাখেরও বেশি নারী শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য অভিবাসন করেছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৬৮ হাজার ৫৭৯ জন নারী শ্রমিক কাজের জন্য বিদেশে গেছেন। ২০২০ সালে ছিল ২১ হাজার ৯৩৪ জন। সে তুলনায় নারী অভিবাসনের সংখ্যা ২০২১ সালে তিন গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পয়েছে। এই পরিসংখ্যানটিকে একটি নিয়মিত বছরের (২০১৯) চিত্রের সঙ্গে তুলনা করলে নারী অভিবাসন প্রকৃতপক্ষে প্রায় ৪০ শতাংশ (২০১৯ সালে ছিল ১ লাখ ৪ হাজার ৭৮৬) হ্রাস পাবে ।

এমইউ/এমএইচআর/জেআইএম