চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর-ডোবায় পানির দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগুলোতে মাছ ধরার হিড়িক পড়েছে। প্রতিটি গ্রামাঞ্চলে এখন মাছ ধরার উৎসব চলছে। কুয়াশা মাখা ভোর হতে না হতেই শুরু হয় মাছ ধরার পালা।
শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সকলেই মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠছে। সকলেই উড়াইন্যা জাল, ঠ্যালা জাল, উইন্যা ও পলো প্রভৃতি নিয়ে এমনকি অনেকে খালি হাতেই খালে-বিলে নেমে পড়েছে মাছ ধরতে। যেখানে হাঁটুপানি সেখানে সেচের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর মৎস্য শিকারিরা খালে-বিলে নামছে। দুপুর পর্যন্ত চলে মাছ ধরার এই উৎসব। পরে নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়।
এদিকে মাছ ধরায় সামিল হতে পেরে আনন্দে মেতে উঠেছে শিশু-কিশোররা। জল-কাদা-পানিতে সারা শরীর মাখামাখি করে তারা মাছ ধরার আনন্দে বিভোর।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নে দিয়ে দেখা যায়, জল-কাদায় ভিজে মাছ ধরতে ব্যস্ত শিশু-কিশোর-কিশোরিরা। কেউ বাজার করা ব্যাগ, কেউ রান্না করা হাঁড়ি আবার কেউ বালতি নিয়ে মাছ শিকার করছে। এতে তারা কৈ, শিং, মাগুর, টেংরা, পুঁটি, খইলসা, শোল, টাকি, বোয়াল, চিকরা, বাইন, কাতলা ও সিলভার কার্প জাতের মাছ পাচ্ছে। বর্ষাকালে ভেসে আসা মাছগুলো ডোবা-পুকুর, খাল-বিল ও নিচু স্থানে আশ্রয় নেয়। পরে শুকনো মৌসুমে সেই সব মাছ ধরা পড়ে।
৫ম শ্রেণির ছাত্র আখের আলী জানায়, সকালে খবর পেয়ে এসেছি। মকরমপুর টেন্ডার জুলি পুকুরে কনকনে শীতে কাঁপছি। আর কাঁদা মেখে আনন্দ করে মাছ ধরছি। আমার স্কুলের সহপাঠীরাও আছে। খুব ভালো লাগছে কাঁদার মধ্যে মাছ ধরতে। আমি গুচি, ট্যাংড়া, শোল, পুঁটি মাছ দিয়ে প্রায় ২ কেজি মাছ পেয়েছি।
আরেক শিশু পিয়াস আলী জানায়, আমি গত দুইদিন ধরে দুই জায়গায় মাছ ধরছি। গতকাল মাছ ধরার জন্য মা আমাকে মারধর করেছেন। তবুও আজকে লুকিয়ে মাছ ধরতে এসেছি। পানিতে ভিজে কাদা মেখে মাছ ধরতে খুব ভাল লাগে।
এ বিষয়ে জানতে সদ্য বদলি হওয়া গোমস্তাপুর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আবু বক্কর ছিদ্দিক জানান, সরকারের নতুন আইনে ডোবা-নালা ও জলাশয়ে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। এতে সাধারণত দেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
সোহান মাহমুদ/এফএ/জিকেএস