নীলফামারী থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে ডোমার শহর। আর এই ডোমার শহরের বুক চিরে বহমান শালকী নদী। তবে দখল, দূষণ আর নাব্য সংকটে দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী শালকী নদী।
এক সময়ের খরস্রোতা নদীটি এখন ময়লা-আর্বজনায় ভরে গেছে। উপজেলার প্রায় সব ক্লিনিকের ময়লা এই নদীতে ফেলায় নদীটি তার নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন স্থান দখলে নিয়ে মাটি ভরাট করে স্থাপনা তৈরি করায় সংকুচিত হয়েছে নদীটি। কোথাও কোথাও মাটি ভরাট করে ঘর নির্মাণ করে কেউ দোকান আবার কেউ ক্লিনিক হিসেবে ব্যবহার করছে। শালকী নদীকে বলা হয় ডোমার পৌরসভার প্রাণ। এই নদীকে পরিকল্পনা করে ব্যবহার করলে পৌরসভা আর পানিবন্দি হয়ে থাকবে না।
ডোমারের বড়রাউতা থেকে উৎপত্তি হওয়া এই নদীটি প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার গিয়ে মিলিত হয়েছে দেওনাই নদীতে। এই নদীটি এক সময় পানিতে ভরপুর ছিল। জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু বর্তমানে নদীর বেশিরভাগ জায়গা শুকিয়ে গেছে। শহরের ময়লা-আর্বজনা ফেলার জায়গা হিসেবে সকলেই এখন এই নদীকে ব্যবহার করায় নদীটি ময়লা দিয়ে ভরাট হয়ে আছে।
নদীর ওপর দিয়ে বয়ে গেছে চিলাহাটি যাওয়ার রেললাইন। প্রতিদিন এই লাইন দিয়ে ৫টি ট্রেন যাতায়াত করে থাকে। নদীটি ভরাট হয়ে রেলসেতুর কিছু জায়গার মাটি ধসে গিয়ে সুরঙ্গ তৈরি হয়েছে।
শিক্ষক জুলফিকার আলী মিঠু বলেন, নদীটি সংস্কার করে এর দুই ধার দিয়ে ছোট রাস্তা তৈরি করলে মানুষ জনের চলাচল উপযোগী হবে। ফলে নদীটি তার সৌন্দর্য ফিরে পাবে।
সাংবাদিক রওশন রশীদ বলেন, নদীটি রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব। গত কয়েক বছর জেলার সব নদী খনন হলেও অজ্ঞাত কারণে এই নদীটি খনন করা হয়নি। নদীটি সংস্কার না করায় দিনে দিনে মাটি ভরাট হয়ে নদীটি মরা খালে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বলেন, নদীটি সংস্কার করা অতীব জরুরি। সংস্কার হলে নদীটি পানি ধরে রাখতে পারবে। আবারো হারানো গৌরব ফিরে পাবে নদীটি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীলফামারী বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান জানান, নদীটি খননের বিষয়ে আমরা উপরে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে খননের প্রক্রিয়ায় রয়েছে শালকী নদী।
এফএ/এমএস