ঝিনাইদহে সরকারের ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য কিনতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অনেকে ভোর থেকেই ভিড় করেন প্রিয়া সিনেমা হল, পায়রা চত্বর, শিশু একাডেমিসহ টিসিবির ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রগুলোতে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যান।
গত এক সপ্তাহ শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। কোথায় কোথাও হট্টগোলের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কেন্দ্রগুলোতে অতিদরিদ্র মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৪৭ জন ডিলার পর্যায়ক্রমে জেলার ছয়টি উপজেলায় টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দিনে দুই হাজার কেজি চিনি, দুই হাজার কেজি মসুর ডাল, পাঁচ হাজার কেজি পেঁয়াজ আর দুই হাজার লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ডাল ৬৫ টাকা, চিনি ৫৫ টাকা ও পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি আর তেল ১১০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
জেলা সদরের সাধুহাটি এলাকা থেকে আসা স্কুলশিক্ষক সাদিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘কী করবো! আয় বাড়েনি বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। লাগামহীন দ্রব্যমূলের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। জানি না কতদিন এভাবে চলবে।’
কাস্টসাগরা এলাকার মধুমিতা বিশ্বাস বলেন, ‘স্বামী দিনমজুর। অল্প টাকা রোজগার। সে কাজে গেছে আর আমি টিসিবি পণ্য কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছি। যদি কম দামে তেল, চিনি, ডাল আর কিছু পেঁয়াজ কিনতে পারি তাহলে অন্তত কয়েকটা দিন ভালোভাবে চলতে পারবো।’
টিসিবি পণ্য কিনতে আসা শফিকুল বিশ্বাস বলেন, ‘সকাল ৭টা থেকে দাঁড়িয়ে দুপুর ১২টার দিকে ২ কেজি ডাল, ২ লিটার তেল, ২ কেজি চিনি আর ৫ কেজি পেঁয়াজ কিনেছি। এতে বেশ কয়েকদিন চলে যাবে।’
টিসিবির পণ্য বিক্রেতা ইমরান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মানুষ অনেক কিন্তু পণ্য তো সীমিত, তাই সবাইকে ঠিকমতো দিতে পারছি না। শহরের পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রাম থেকেও মানুষ পণ্য নিতে আসছে। তাই কিছুটা হলেও এ সংকট দেখা দিচ্ছে।’
টিসিবি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম। তিনি বলেন, সবাই যেন সঠিকভাবে পণ্য কিনতে পারেন, কোথাও যেন অনিয়ম না হয় সেদিকে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসআর/জেআইএম