মুসলিম বিশ্বের মহিমান্বিত মাস রমজান। এ মাস ঘিরে নানা অনুষ্ঠান আর রীতি-রেওয়াজ আছে। রোজা রাখা, ইফতারের পর তারাবির নামাজ পড়া ইত্যাদি ছাড়াও আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমেও সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয় খুশির আমেজ। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের চেয়েও এসব রীতি সাংস্কৃতিক উদযাপন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবানন। ১৮টি ধর্মীয় গোষ্ঠী লেবাননে বিরাজমান। প্রত্যেকে স্বকীয়তার সঙ্গে নিজ ধর্মের রীতিনীতি ও উৎসব পালন করেন। এক ধর্মের লোক অন্য ধর্মের লোকের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায় না। ধর্মীয় সমঝোতা আর পারস্পরিক সম্প্রীতি বেশ জোরদার দেশটিতে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এমন নজির নেই। সেখানকার মুসলিমরা কীভাবে রমজান পালন করেন, তা নিয়ে লিখেছেন মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ—
মিডফা আল ইফতারমধ্যপ্রাচ্যজুড়ে রোজায় অনেক দেশে প্রতিদিন কামান দাগা হয়ে থাকে। মাসব্যাপী এমন অবস্থা বিরাজ করে। প্রতিদিন রোজা শেষ হওয়ার সংকেত হিসেবে এমন করা হয়। একে বলে মিডফা আল ইফতার। প্রায় ২০০ বছর আগে মিসরে এভাবে রোজা শেষের সংকেত দেওয়ার প্রথা শুরু হয়েছিল বলে জানা যায়।
রোজা শেষের সংকেত প্রথা যেভাবেসে সময় মিসর ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের আওতাধীন। শাসক ছিলেন খোস কাদাম। কথিত আছে, খোস কাদাম একদিন সূর্যাস্তের সময় নতুন একটি কামান পরীক্ষা করার সময় ঘটনাক্রমে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলেন। সমগ্র কায়রোয় শব্দটি শোনা গিয়েছিল। তারা মনে করেছিল, ইফতারের সময় হয়েছে, তা জানানোর জন্য বুঝি এটি নতুন শাসকের নতুন পদ্ধতি। তারা একে স্বাগত জানায়।
লেবানিজ আর্মির পুনরায় প্রথা শুরুশুধু তাই নয়, খোস কাদামের কন্যা হাজা ফাতমা এভাবেই ইফতারের সময় ঘোষণার অনুরোধ জানান। প্রথাটি মিসরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অনেক দেশে পৌঁছেছিল। ১৯৮৩ সালে ইফতার ঘোষণার সময় কয়েকটি কামান দিয়ে একটি আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কয়েকটি কামান বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। পরে লেবানিজ আর্মি এ প্রথা পুনরায় শুরু করে। আজও তা অব্যাহত রয়েছে।
মুনশি/এসইউ/এএসএম