দেশজুড়ে

ফেরি সংকটে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ভোগান্তি

ফেরি সংকটে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ রুটে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। পদ্মা পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ঈদে এ ভোগান্তি আরও চরম আকার ধারণের আশংকা করছেন যাত্রীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ রুটে শুধুমাত্র দিনের বেলায় ছয়টি ফেরি চলাচল করছে। যা দিকে ৬০০-৭০০ যানবাহন পারাপার করছে। গত বছর যেখানে ১৭-১৮টি ফেরিতে ২-৩ হাজার যান পরাপার করা হতো। এ বছর ফেরির পাশাপাশি ৮৭টি লঞ্চ ও ১৫৩ টি স্পিডবোট সচল রয়েছে।

সূত্র জানায়, এ রুটে ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট থেকে ফেরি চলাচলে অচলাবস্থা তৈরি হয়। ৮ নভেম্বর হতে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার দিনের বেলায় এবং ১৩ ডিসেম্বর থেকে পদ্মা সেতু এড়িয়ে শিমুলিয়া থেকে নতুন ঘাট মাঝিকান্দি নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হয়। শুধুমাত্র হালকা যানবাহন নিয়ে পারাপার করে এসব ফেরি। চালু থাকা ছয়টি ফেরির মধ্যে মিনি রোরো সুফিয়া কামাল, মিডিয়াম কুঞ্জলতা, কেটাইপ ফেরি কুমিলা। এসব ফেরি দিনে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ রুটে ও রাতে শিমুলিয়া মাজিকান্তি নৌ রুটে চলাচল করে। অপর তিনটির মধ্যে ছোট ফেরি কর্ণফুলী ও ডাম্প ফেরি রায়পুর, রাণীগঞ্জ দিনের বেলা শিমুলিয়া-মাজিকান্দি নৌ রুটে চলে।

সরজমিনে দেখা যায়, শিমুলিয়া-মাজিকান্দি রুটে তিনটি ফেরি চললেও বন্ধ থাকে বাংলাবাজার রুটের ফেরি। এতে প্রতিদিনই সকালে ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। তবে দুপুর থেকে যানবাহন কমে আসে। এদিকে ঈদে হাজার হাজার যানবাহনের উপস্থিতে দিনভর গাড়ির চাপ থাকবে বলে জানায় যাত্রীরা।

সুমাইয়া হিমু নামের এক যাত্রী জানান, পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য ঈদে বাড়ি যাই। তবে প্রতি বছরই ফেরিঘাটে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাশেদ খান আদনান জানান, ২-৩ ঘণ্টা আগে ঘাটে আসি। তারপরও ফেরির জন্য বসে থাকতে হয়। কখনো কখনো ৬-৭ ঘণ্টাও বসে থাকা লাগে। রোজার মধ্যে বসে থাকা খুব কষ্টকর। ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি করা উচিত।

গাড়ি চালক ইয়াছিন মিয়া বলেন, এখানে ফেরির সমস্যাটাই মূল। পর্যাপ্ত ফেরি নাই। যদি আমাদের ভোগান্তি দূর করতে হয় তবে আরও ফেরি বাড়াতে হবে। রাতে বেলাও ফরি চালাতে হবে।

এ বিষয়ে বিআইডাব্লিউটিএ শিমুলিয়া ঘাটের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন জানান, যাত্রী পারাপারের জন্য মাঝিরকান্দি এলাকায় নতুন ঘাট স্থাপন করা হচ্ছে। লঞ্চ ঘাটটিও কিছুটা স্থানান্তর করা হবে। শিমুলিয়া ঘাটে ঈদের আগেও পরে আটদিনের জন্য আনসার নিয়োজিত থাকবে। বাংলাবাজার ও মাঝিরকান্দিতে ছয়দিনের জন্য থাকবে।

তিনি আরও বলেন, দুই বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক বাড়ি যেতে পারে নি। এ বছর তারা বাড়ি যাবে। এ বছর যেহেতু সব নৌযানই সচল থাকবে সে ক্ষেত্রে অনেক বেশি মানুষ আসবে।

মাওয়া নৌ-পুলিশের ইনচার্জ আবু তাহের জানান, শিডিউল ছাড়া কোনো লঞ্চ-স্পিডবোট যাতে চলতে না পারে সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিআইডাব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান বলেন, ঈদে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া মাজিকান্দি নৌ রুটে ঈদে ১০টি ফেরি থাকবে। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ২৪ ঘণ্টা ফেরি চলাচলের জন্য চিঠি দিয়েছি। অনুমোদন পেলে এ রুটে ২৪ ঘণ্টা ফেরি চলাচল করবে।

আরাফাত রায়হান সাকিব/আরএইচ/এএসএম