হবিগঞ্জে কয়েকদিন ধরে কমছে হাওরের পানি। তবুও শ্রমিক সংকটে ঠিকমতো ধান কাটতে পারছেন না জেলার নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা। তাই ধান গোলায় তোলা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তারা। এছাড়া কিছু শ্রমিক পাওয়া গেলেও তাদের অতিরিক্ত মূল্য দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
এদিকে, বানের পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার ৯৫ হেক্টর জমির বোরো ধান। এ অবস্থায় শঙ্কা কাটছে না কৃষকদের। হাওর এলাকায় এখনো পর্যন্ত কাটা হয়েছে মাত্র ৪৫ শতাংশ জমির ধান।
স্বজন গ্রামের কৃষক নিশিকান্ত রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘পানিতে ধান তলিয়ে গেছে। যেটুকু আছে তাও ঠিকমতো কাটতে পারছি না। শ্রমিক পাওয়া যায় না। আগে যে ধান কাটতে এক থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হতো এখন সেখানে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।’
লাখাই শিবপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া বলেন, ‘একেতো জমি পানিতে তলিয়ে গেছে, তার ওপর শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এখন সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করে তবেই পরিবার নিয়ে চলতে পারবো, অন্যথায় করুণ জীবনযাপন করতে হবে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় এ বছর বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাওরে আবাদ হয় ৪৬ হাজার ৯৩০ হেক্টর এবং উঁচু জমিতে আবাদ হয় ৭৫ হাজার ৪৪০ হেক্টর। এরইমধ্যে হাওরে কাটা হয়েছে মাত্র ৪৫ শতাংশ জমির ধান। আর উঁচু জমিতে কাটা হয়েছে ৬ শতাংশ ধান।
তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ নয়ন মনি সূত্র ধর বলেন, জেলায় হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শ্রমিকের কোনো সংকট নেই। তবে শ্রমের মূল্য সামান্য বেড়েছে।
তিনি বলেন, এখন হাওরে পানি কমছে। তাই নতুন কোনো এলাকার ধান পানিতে তলিয় যায়নি। আশা করা যাচ্ছে, এখন দ্রুতই সব জমির ধান কাটা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতেই জেলার লাখাই উপজেলায় বানের পানি হানা দেয়। ভারতের আসাম, চেরাপুঞ্জি ও মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ধলেশ্বরী ও কালনী নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। এতে ওই উপজেলার হাওরে পানি প্রবেশ করে বোরো ধান তলিয়ে যেতে থাকে। লাখাই সদর ইউনিয়নের শিবপুর, সুজনপুর, বারচর, মাদনা, সন্তোষপুর, কামালপুর, রবিরকোণা, নোয়াগাও হাওরের ৯৫ হেক্টর বোরো জমি পুরোপুরি তলিয়ে যায়। আংশিক তলিয়ে যায় ২০০ হেক্টর জমির ধান।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এমআরআর/এসআর/এএসএম